প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:৪৩ পিএম
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:৪৫ পিএম
চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজন দক্ষ ও প্রযুক্তি নির্ভর জনশক্তি। দেশের শ্রমনির্ভর অর্থনীতিকে জ্ঞান, দক্ষতা ও প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতিতে রূপান্তর করতে বহুমুখী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা। এসব কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে শিল্পখাতের অভিজ্ঞ পেশাজীবীদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক কার্যক্রমে যুক্ত করে ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়ার সংযোগ শক্তিশালী করতে চায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ইউজিসি বলছে, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এ পদ্ধতিটিকে প্রফেসর অব প্রাকটিস হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় প্রবর্তনে সরকার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে।
ইউজিসির বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২২ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। শিগগিরই প্রতিবেদনটি রাষ্ট্রপতির কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর।
প্রতিবেদনে মোট ১৫টি সুপারিশ করেছে ইউজিসি। এর মধ্যে ১০টি সুপারিশই করা হয়েছে গবেষণায় মানোন্নয়নের জন্য। এর বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য এনডাউমেন্ট ফান্ড গঠন করে শিক্ষাঋণ দেওয়া, উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং ট্রেজারার নিয়োগে পুল গঠন, ভর্তিতে জটিলতা নিরসনে স্বতন্ত্র কমিশন গঠন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন, ভূমির পরিমাণ যৌক্তিক নির্ধারণ, ইউজিসির জনবল বৃদ্ধি ইত্যাদি।
দেশের একাধিক শিক্ষাবিদ জানান, দেশের উচ্চ শিক্ষার বিস্তৃতি ও অর্জন বাড়লেও নেই গুণগত শিক্ষা। উচ্চ শিক্ষা কর্মমূখী না হওয়ার কারণে অনার্স-মাস্টার্স পাশ করেও অনেক শিক্ষার্থীকে থাকতে হচ্ছে বেকার। তাই চুতর্থ শিল্প বিল্পবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে যেতে হলে কর্মমুখী শিক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে।
তারা আরও বলেন, শিল্পবিপ্লবই অর্থনীতিকে দ্রুত গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আর চতুর্থ শিল্পবিপ্লব হচ্ছে মূলত তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর বিপ্লব। এ বিপ্লব অর্থনীতির গতিপথ পরিবর্তন করলেও রয়েছে নানা সমস্যা। যেমন ডিজিটাল বিল্পবের পথে কর্মক্ষেত্রে ঝুঁকি বাড়ার পাশাপাশি উৎপাদন শিল্পের নিয়ন্ত্রণও বৃদ্ধি পাবে। তাই এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে যুগপযোগী নানা পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে।
চতুর্থ শিল্পবিল্পবকে সামনে রেখে আরও বেশ কিছু সুপারিশ আনা হয়েছে ইউজিসির বার্ষিক প্রতিবেদনে।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ কে আজাদ চৌধুরী চৌধুরী বলেন, ‘উচ্চশিক্ষার বিস্তৃতি আমাদের অনেক বেড়েছে। সংখ্যার বিচারে উচ্চশিক্ষায় আমাদের অর্জন অনেক। কিন্তু গুণগত শিক্ষার ব্যাপারে আমাদের কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাচ্ছে না। সুতরাং যারা মন্ত্রিসবায় এসেছেন তারা কোয়ালিটি এডুকেশনের দিকে নজর দেবেন। এক কথায় শিক্ষার মানোন্নয়ন, শিক্ষার প্রাসঙ্গিকতা, চতুর্থ শিল্প বিল্পবের প্রতিফলন ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দক্ষ জনশক্তি না থাকলে কোনও উন্নয়নই টেকসই হয় না। দক্ষ জনশক্তি প্রস্তুতে যথাযথ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। সেটা দিলেই দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হবে, সামগ্রিক বিচারে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’