ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড
শেরপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:২৫ পিএম
আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:৪৬ পিএম
পরীক্ষার ফলের স্ক্রিনসট। প্রবা ফটো
‘অনলাইনে আমার রোল নম্বর দিয়ে সার্চ দিলে প্রথমে মো. সাজু মিয়া নামে একজনের তথ্য আসে। তখন ভেবেছিলাম ভুল নম্বর দিয়ে সার্চ করেছি। পরে নিবন্ধন নম্বর ও রোল নম্বর সঠিকভাবে বসিয়ে কয়েকবার চেষ্টা করলেও বারবার মো. সাজু মিয়ার তথ্যই দেখানো হয়। এ অবস্থায় আমার তো শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম। মাথা ঘুরতে থাকে। তখন চোখে যেন সর্ষেফুল দেখছিলাম।’ বলছিলেন ময়মনসিংহের সরকারি আনন্দমোহন কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী গোলাম আহমেদ লিমন। লিমনের মতো ময়মনসিংহের প্রায় আট হাজার শিক্ষার্থী এই ভোগান্তিতে পড়েছেন।
ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি প্রবেশপত্রে যে রোল নম্বর নিয়ে পরীক্ষার হলে বসেছিলেন শিক্ষার্থীরা, সেই রোল নম্বর পাল্টে গেছে ফল প্রকাশের আগেই। কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষার্থী জানতে পেরেছেন ফল প্রকাশের পরে। নতুন নম্বর অনুযায়ী তাদের পরীক্ষার যে ফল এসেছে তা তারা মানতে পারছেন না। তারা মনে করছেন, তাদের পরীক্ষার ফল ভুল এসেছে। এতে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
লিমন বলেন, ‘বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে নিজের উপজেলা শহরের সরকারি ও জেলার বেশ কয়েকটি স্বনামধন্য সরকারি-বেসরকারি কলেজ রেখে ময়মনসিংহ শহরের ঐতিহ্যবাহী সরকারি আনন্দমোহন কলেজে ভর্তি হই। সুন্দরভাবে সব বিষয়ের পরীক্ষা শেষ করেছিলাম। আশায় বুক বেঁধেছিলাম জিপিএ-৫ পাব।’ লিমনের ফল এসেছে জিপিএ-৩.৫। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।
শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মো. সামছুল ইসলাম এই ত্রুটির কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আট হাজারের মতো শিক্ষার্থীর রোল নম্বর প্রযুক্তিগত ক্রটির কারণে ভুল হয়েছে। এটা অনিচ্ছাকৃত ভুল। পরে বিষয়টি তদারক করে নতুন রোল নম্বর দেওয়া হয়েছে। তবে রোল নম্বর পরিবর্তনের সঙ্গে ফলাফলের কোনো সম্পর্ক নেই বলে তিনি দাবি করেন। এ বিষয়ে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. গাজী হাসান কামাল বলেন, নিজস্ব জনবল না থাকায় প্রযুক্তিগত ক্রটির কারণে এমন হয়েছে। কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না। প্রবেশপত্র পরিবর্তনের কারণে কেউ অকৃতকার্য হয়েছে বা ফল পরিবর্তন হয়েছে এমন অভিযোগ অমূলক বলে তিনি দাবি করেন।
সূত্র অনুযায়ী, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে এ বছর চার জেলার ২৮৬টি কলেজের ৭৫ হাজার ৮৪৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। বোর্ডে পাসের হার ৭০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। মোট পাস করেছেন ৫৩ হাজার ৪২৬ জন।