বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:৪৪ এএম
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ছবি
দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দেড় যুগেই নানা ক্ষেত্রে সুনাম কুড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার। সাড়ে সাত একরের ক্যাম্পাস ও ১৪ তলাবিশিষ্ট একমাত্র ছাত্রী হলের নিরাপত্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যা মাত্র ১৮ জন। প্রতি এক হাজার শিক্ষার্থীর নিরাপত্তায় গড়ে মাত্র ১ জন নিরাপত্তাকর্মী দিয়েই কাজ চালাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফলে ক্যাম্পাসে নিয়মিতই ঘটছে চুরিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ। নিরাপত্তাশঙ্কায় দিন পার করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ক্যাম্পাস ও ছাত্রী হলের নিরাপত্তায় প্রয়োজন অন্তত ১০২ জন নিরাপত্তাকর্মী। কিন্তু নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যা মাত্র ১৮ জন। প্রয়োজনের তুলনায় প্রায় ৮৩ শতাংশ নিরাপত্তাকর্মীর সংকট নিয়েই কাজ চালাচ্ছে প্রশাসন। দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দিয়ে আরও ৬ নিরাপত্তাকর্মীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে মোট নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৪ জনে। দৈনিক তিনটি শিফটে ভাগ হয়ে মাত্র ৬ জন করে নিরাপত্তাকর্মী দায়িত্ব পালন করছেন এই ক্যাম্পাসে।
নিরপত্তাকর্মী সংকটে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি ফটকের মধ্যে মাত্র দুটি ফটক খোলা রাখা হচ্ছে। তিন নম্বর ফটক দুই বছর আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ফটকটিও মাঝেমধ্যেই বন্ধ রাখা হচ্ছে। চতুর্থ ফটকেও মাত্র একজন নিরাপত্তাকর্মী থাকলেও বাড়তি দায়িত্বের কারণে সেই ফটকটিও বিকালেই বন্ধ করে দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চলাচলেও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
৮ ঘণ্টার শিফটে ক্যাম্পাসে মাত্র ৬ জন নিরাপত্তাকর্মী দায়িত্বে থাকায় তারা ঠিকভাবে কাজও করতে পারেন না। ২ জন মূল ফটক ও একজন দ্বিতীয় ফটকে দায়িত্ব পালন করেন। বাকি ৩ জন দিয়ে চলে পুরো ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা।
প্রতিনিয়তই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চুরির ঘটনা ঘটছে। চুরির ঘটনায় মামলা হলেও এর কোনো সুরাহা হচ্ছে না। বেসামাল পরিস্থিতি সামাল দিতে নিরাপত্তাকর্মীদের জরুরি প্রয়োজনেও ছুটি দিচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে তাদের মধ্যেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিরাপত্তাকর্মী বলেন, কোনো বিরতি ছাড়াই ৮ ঘণ্টা ডিউটি পালন করতে হয়। বসারও সুযোগ পাই না। প্রতি শিফটে আমরা মাত্র ৬ জন। সব দিকে নজর রাখা সম্ভব হচ্ছে না। জরুরি প্রয়োজনেও ছুটি পাই না।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা ডেপুটি রেজিস্ট্রার সাইদুর রহমান বলেন, নিরাপত্তাকর্মী সংকটের কারণে ম্যানেজ করে চলতে হচ্ছে। কাউকে ছুটি দিতে পারছি না। ইউজিসিতে অনেকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। এক মাস আগেও চিঠি দিয়েছি কিন্তু এখনও কোনো উত্তর পাইনি। আশা করি, দ্রুত এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, নিরাপত্তাকর্মীর সংকট রয়েছে। সেজন্য পুলিশ প্রশাসনেরও সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। চুরির ঘটনায় মামলা হচ্ছে। নতুন নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ না হলে এই সংকট দূর হবে না। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।