সাংবাদ সম্মেলনে বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষার্থী
গোপালগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৩ ২০:৫৪ পিএম
আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৪২ এএম
মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হল চত্ত্বরে সাজ্জাদ সংবাদ সম্মেলন করেন। প্রবা ফটো
ক্যাম্পাসে নির্যাতনের বিচার না পেয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবির) এক শিক্ষার্থী। অব্যাহত হত্যার হুমকির মুখে তিনি বলেছেন, ‘আমি আত্মহত্যা করলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়ী থাকবে।’
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন। এ সময় সাজ্জাদের সহপাঠিরা ও বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সাজ্জাদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ৬ নভেম্বর রাতে রনি মৃধার নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন যুবক শেখ রাসেল হলের ৩০৩ নম্বর রুমে গিয়ে আমাকে মারধর করে। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরলে প্রশাসন আমাকে সুষ্ঠ বিচারের আশ্বাস দেয়। পরে তদন্ত কমিটি গঠন করা এবং সেই কমিটিকে ১২ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু ১১ নভেম্বর আবারও হলে গিয়ে রনি ও তার লোকজন তদন্ত কমিটির কাছে সত্য না বলার জন্য আমাকে হুমকি দেয়। এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ওই দিনই আমরণ অনশনে বসি। কিন্তু আবারও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিচারের আশ্বাস দিলে অনশন ভেঙে হলে ফিরে যাই। কিন্তু ৭ কর্মদিবস পেরিয়ে গেলেও এখন সুষ্ঠু বিচার পায়নি। এতে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।
তিনি আরও বলেন, গত ১১ দিন আমি ঠিকভাবে ঘুমাতে পারিনি। সব সময় হতাশা ও ভয়ের মধ্যে থাকতে হয়। যারা আমাকে মারধর করল তারা ক্যাম্পাসে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমার মনে হয়, আমি সঠিক বিচার পাব না। যেকোনো সময় আমাকে মেরে ফেলবে। আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তাই আমি আত্মহত্যা করলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমার লাশটি যেন বাবা-মায়ের কাছে পৌঁছে দেয়।
জানা গেছে, গত ৫ নভেম্বর ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগ ও ফার্মেসি বিভাগের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় দুই বিভাগের খেলোয়াড়দের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক এবং একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই রাতে ফার্মেসি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রনি মৃধা তার ১০-১২ জন সহযোগীদের নিয়ে শেখ রাসেল হলে গিয়ে ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসাইন্স বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাজ্জাদ হোসেন ও মো. জাহিদ হোসেনকে কক্ষ থেকে বের করে মারধর করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে দুই-একদিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবেন তদন্ত কমিটি।’
তবে অভিযোগের ব্যাপারে মো. রনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ,বানোয়াট। ফুটবল খেলাকে ঘিরে এই ঝামেলার সূত্র। অথচ ঘটনার দিন আমি মাঠেই ছিলাম না। তারপরও আমার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমার নেতৃত্বে কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি।’