× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

১৫ দিনের উপাচার্যের কাণ্ডে উত্তপ্ত লিডিং ইউনিভার্সিটি

কাওছার আহমদ, সিলেট

প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:০৯ পিএম

১৫ দিনের উপাচার্যের কাণ্ডে উত্তপ্ত লিডিং ইউনিভার্সিটি

ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সিলেট লিডিং ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস। ইউনিভার্সিটির দুজন শিক্ষকের চাকরিচ্যুতির আদেশকে কেন্দ্র করে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এই দুই শিক্ষকের চাকরিচ্যুতির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস ও বাইরের সড়কে আন্দোলনে নেমেছেন। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সিলেটের সম্মিলিত নাগরিক সমাজও। 

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সম্মিলিত নাগরিক সমাজের নেতারা অনতিবিলম্বে ইউনিভার্সিটির এই দুই শিক্ষকের পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন। এর আগেও বিভিন্ন ইস্যুতে একাধিকবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল সিলেটের এই বেসরকারি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। 

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. কাজী আজিজুল মাওলা ইউজিসির অনুমোদন নিয়ে গত ৪ অক্টোবর একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে যোগ দিতে ১৫ দিনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে যান। উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ট্রেজারার বনমালী ভৌমিক। তিনি ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়েই ১২ অক্টোবর স্থাপত্য বিভাগের দুই শিক্ষক রাজন দাশ ও সৈয়দা জেরিনা হোসেনকে বরখাস্ত করেন। রাজন দাশের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও সৈয়দা জেরিনা হোসেনের বিরুদ্ধে বার্ধক্যের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর আগের দিন ১১ অক্টোবর এই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিস দেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য। নোটিসে তিন দিন সময় দেওয়া হলেও নোটিসের পরদিনই তাদের বরখাস্ত করা হয়।

এদিকে এই আদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী হয়নি বলে দাবি করেছেন বরখাস্ত শিক্ষক রাজন দাশ। তিনি বলেন, কারণ দর্শানোর নোটিস তিনি ১১ অক্টোবর পেয়েছেন। নোটিসে উল্লেখ ছিল তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে হবে। নোটিস পেয়েই তিনি ওই দিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে নোটিসের জবাবের জন্য ১০ দিন সময় চেয়েছেন। কিন্তু তাকে পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ দেওয়া হয়নি। নোটিস গ্রহণের এক দিনের মধ্যে তড়িঘড়ি করে বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকতা করছেন সৈয়দা জেরিনা হোসেন। মেধাবী এই শিক্ষককেও বয়সের দোহাই দিয়ে বরখাস্ত করা হয়েছে।

রাজন দাশ বলেন, ‘উপাচার্য ড. কাজী আজিজুল মাওলা ইউজিসির অনুমোদন নিয়ে এবং ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অবগত করে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। এরই মধ্যে ট্রেজারার বনমালী ভৌমিক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য দাবি করে ইউনিভার্সিটির একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট সভা ডেকেছেন, একজন সেকশন অফিসার নিয়োগ দিয়েছেন, সব প্রক্টর পরিবর্তন করেছেন এবং আমাকে বরখাস্ত করেছেন। এমনকি ইউনিভার্সিটিতে ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।’

এদিকে দুই শিক্ষকের চাকরিচ্যুতির বিষয়টি জানার পর বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে রবিবার সারা দিন ক্যাম্পাসে আন্দোলন চালিয়ে যান। এ সময় তারা বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা ট্রেজারারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ট্রেজারারের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।

শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সিলেটের সম্মিলিত নাগরিক সমাজ। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সম্মিলিত নাগরিক সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা জাসদের সভাপতি লোকমান আহমদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ বেদানন্দ ভট্টাচার্য্য, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এটিএম হাসান জেবুল, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জহির বিন আলম, বাসদ (মার্ক্সবাদী) সিলেট জেলার আহ্বায়ক উজ্জ্বল রায়, জেলা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও যমুনা টিভির ব্যুরো প্রধান মাহবুবুর রহমান রিপন, চিত্রশিল্পী সমন্বয় পরিষদের সদস্য সচিব শামসুল বাসিত শেরো, জেলা বাসদের সদস্য সচিব প্রণব জ্যোতি পাল প্রমুখ।

মানববন্ধনে তারা বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এর লঙ্ঘন করে দুর্নীতিবাজ চক্র সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক ও অন্যায়ভাবে দেশখ্যাত স্থপতি জেরিনা হোসেন এবং রাজন দাশকে বহিষ্কার করার মধ্য দিয়ে লিডিং ইউনিভার্সিটিকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করছে। অবিলম্বে চাকরিচ্যুতির আদেশ প্রত্যাহার করে ওই শিক্ষকদের পুনর্বহালের দাবি জানান তারা।

ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার মফিজুল ইসলাম বলেন, আজ উপাচার্যের ছুটি শেষ হচ্ছে। এরপর তিনি কর্মস্থলে ফিরবেন। কারও কোনো বক্তব্য থাকলে উপাচার্যের কাছে বলতে পারেন।

জানা গেছে, সাবেক আমলা বনমালী ভৌমিক এ ইউনিভার্সিটিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন ইস্যুতে ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ইতোপূর্বে বর্তমান উপাচার্য স্থপতি আজিজুল মাওলার সঙ্গেও তার বিরোধ হয়েছিল। পরে ট্রাস্টি বোর্ডের হস্তক্ষেপে জটিলতার নিরসন হয়। এখন আবার নতুন করে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। 

এসব বিষয়ে জানতে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বনমালী ভৌমিককে একাধিবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। মেসেজ দিলেও তিনি উত্তর দেননি। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা