প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৩ ২২:৩০ পিএম
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২৩ ২২:৩২ পিএম
কবি সুকুমার রায়ের শততম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে চিত্র প্রদর্শনী। ছবি: সংগৃহীত
সুকুমার রায়ের শততম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাকে নিয়ে আঁকা প্রথম শিল্পকর্ম প্রদর্শন করেছেন শিল্পী অনিন্দ্য বিশ্বাস। আগামী ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এই প্রদর্শনী।
সোমবার (৯ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগের অধ্যাপক শিশির কুমার ভট্টাচার্য।
পরে প্রদর্শনীর উপর আলোচনা করেন চারুকলার শিক্ষক ও গুণিজনেরা। আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অধ্যাপক ড. আব্দুস সাত্তার, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার অধ্যাপক পরাগ রয়, ইতিহাসের শিক্ষক মলয়চন্দ্র মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। আলোচনা শেষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষকদের উত্তরীয় পরিয়ে সুকুমার সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
শিল্পী অনিন্দ্য বিশ্বাস বলেন, ‘সুকুমার রায়ের জন্ম এই বাংলাদেশে। তাই এখানে প্রদর্শনীর জন্য আমি যোগাযোগ করি। সুকুমার রায়কে নিয়ে বলার ধৃষ্টতা মার্জনীয়। তাকে নিয়ে কিছু বলতে গেলে মহাভারত বা রামায়ণ হয়ে যাবে। সুকুমার রায়কে নিয়ে শুধু এইটুকু বলি সুকুমার রায় হওয়া যায় না, সুকুমার রায় জন্মায়। তিনি অল্প কিছুদিনই ইহলোকে ছিলেন। তিনি এই অল্প দিনেই যা করে গেছেন তা অকল্পনীয়। কাজ করতে গিয়ে আমার মনে হয়েছে সুকুমার রায়ের যে সৃষ্টি তা কোনো আর্ট কলেজে পড়েও করা যায় না।’
উদ্বোধন করে শিশির ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমাদের দেশে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করায় তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। অনিন্দ্যের উদ্দেশ্য হচ্ছে, আমাদের মধ্য থেকে হাসি আনন্দ উঠে যাচ্ছে, সেখানে মোবাইল ফোন জায়গা দখল করে নিচ্ছে। আমরা প্রদর্শনীতে গিয়েও দেখি সেখানে প্রদর্শনীতে মনোযোগ না দিয়ে মোবাইলের দিকে চেয়ে থাকে এই প্রজন্ম। সুকুমার রায়ের ছবিতে এক ধরনের হাসি, আনন্দ, কৌতুক থাকে, যেগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এগুলোর দরকার আছে, সেই প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে অনিন্দ্য এই কাজগুলো করেছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রদর্শনী।
আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘অনিন্দ্য অনেক গুণে গুণান্বিত। আজকে যে প্রদর্শনী এটা অদ্ভুত প্রদর্শনী। এরকম প্রদর্শনী আমরা খুব বেশি দেখি না। সুকুমার রায়ের ১০০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানানোর পদ্ধতিটা একেবারেই ভিন্ন। আমরা দেখি অনুষ্ঠান করে তার কর্ম নিয়ে আলোচনা করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। কিন্তু অনিন্দ্য তেমনটা না করে উনি সুকুমার রায়ের ছবি দেখে উনার যে অনুভূতি হয়েছে তা ছবির মাধ্যমে প্রকাশ করে তা দেখিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। দুই শিল্পীর ছবি একইসাথে আমরা দেখতে পাচ্ছি, এটি সত্যিই ব্যতিক্রম। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে ওপার বাংলার সঙ্গে আমাদের বাংলার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হলো।
মলয়চন্দ্র মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আজকের প্রদর্শনীর একটি অভিনবত্ব আছে। আমরা সুকুমার রায়ের ছড়াগুলো জানি, তিনি প্রাতিষ্ঠানিক কোনো চিত্রশিল্পের শিক্ষা নেননি। কিন্তু তিনি অসাধারণ চিত্র অঙ্কক করেন। আমরা আশা করব আপনারা যারা এসেছেন তারা এই প্রদর্শনীটি দেখে একজন নতুন শিল্পীকে, নতুন ভাবনার মানুষকে আপনারা চিনতে পারবেন। আপনাদের এই দেখা বিফলে যাবে না।’
রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার অধ্যাপক পরাগ রায় বলেন, ‘অনিন্দ্যকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। সুকুমার রায় একজন বিপদজনক মানুষ। সুকুমার রায়ের ছবি এবং সেটার ব্যাখ্যা অনিন্দ্য করেছেন ছবি দিয়েই। এটার মাধ্যমে সুকুমার রায়কে নতুন করে আবিষ্কার করার চেষ্টা করেছে অনিন্দ্য। এটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’