গাইবান্ধা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:০৯ পিএম
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:১৫ পিএম
কদমতলী নিম্ন ম্যাধমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস নিচ্ছেন এক শিক্ষক। প্রবা ফটো
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে একটি বিদ্যালয়ে কাগজে কলমে শিক্ষার্থী ভর্তি আছে ১৬০ জন। তবে বিদ্যালয়টিতে প্রতিদিন ক্লাস করে ১০-১২ জন শিক্ষার্থী। শিক্ষক ও কর্মচারীর সংখ্যাও ১২। সকালে ক্লাস শুরু হলেও স্কুল বন্ধ হয়ে যায় দুপুরের মধ্যেই। এমন চিত্র উপজেলার ২ নম্বর হোসেনপুর ইউনিয়নের কদমতলী নিম্ন ম্যাধমিক বিদ্যালয়ের।
বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ শ্রেণিকক্ষে চেয়ার-টেবিল থাকলেও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নগণ্য। শিক্ষার্থীর মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণিতে একজন, সপ্তম শ্রেণিতে সাতজন ও অষ্টম শ্রেণিতে চারজন। মোট ১২ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত রয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে গিয়ে পাওয়া যায়নি প্রধান শিক্ষক কেএম সরোয়ার কায়েনাত কাজী লাবলুকে।
অভিযোগ রয়েছে, নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে গোপনে নিয়োগবাণিজ্যের মাধ্যমে বিদ্যালয়টিতে ইতোমধ্যে প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচজনকে নতুন নিয়োগ করা হয়েছে। তার পরও বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসেনি। ফলে দিন দিন শিক্ষার্থীশূন্য হয়ে পড়ছে বিদ্যালয়টি।
সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মনিরা আক্তার বলে, ‘প্রতিদিন আমরা তিন থেকে চার জন ক্লাস করি। প্রতি ক্লাসেই তিন-চার জনের বেশি ছাত্রছাত্রী হয় না। স্যারেরা ক্লাস করিয়ে দুপুরের মধ্যেই ছুটি দিয়ে দেন। ফাঁকা ক্লাসে এভাবে লেখাপড়া করতে ভালো লাগে না।’
মজনু নামে আরেক শিক্ষার্থী বলে, ‘এই স্কুলের বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রীই গরিব পরিবারের। এজন্য লেখাপড়ার প্রতি তেমন একটা গুরুত্ব দেয় না পরিবার। আবার স্কুল থেকেও তেমন একটা চাপ দেওয়া হয় না। এ কারণেই দিন দিন স্কুলের অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানান, বিদ্যালয়ে ১০-১২ জনের বেশি ছাত্রছাত্রী আসে না। তা ছাড়া শিক্ষার মান একেবারে ভালো না। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অভিভাবক সমাবেশসহ সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় তদারকির কথা জানান অভিভাবকরা।
কদমতলী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেএম সরোয়ার কায়েনাত কাজী লাবলু ফোনে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের কাজের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসে আছি। আজ আর বিদ্যালয়ে ফিরব না।’
পলাশবাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহাতাব হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, প্রধান শিক্ষক অফিসে এসেছিলেন তিনি বিদ্যালয়ে ফিরে গেছেন। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিস্তারিত প্রধান শিক্ষক বলতে পারবেন।
বিদ্যালয়টির শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে জেলা ও বিভাগীয় শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সচেতন নাগরিক ও এলাকাবাসী।