রুয়েট ছাত্রলীগের সম্মেলন মঙ্গলবার
রাজশাহী অফিস
প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:৩৩ পিএম
রুয়েটের প্রধান ফটক। সংগৃহীত ছবি
প্রায় ৭ বছর পর মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) শাখা ছাত্রলীগের চতুর্থ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। সকাল ১০টায় রুয়েটের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়াম চত্ত্বরে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা জানান, রুয়েট ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে শীর্ষ পদ পেতে কেন্দ্রীয় নেতাসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন পদপ্রত্যাশীরা। তবে শীর্ষ পদের আলোচনায় এমন কয়েকজন নেতা রয়েছেন; যারা বিতর্কিত নানা কর্মকাণ্ডের জন্য সমালোচিত। এমনকি শীর্ষ পদের দৌঁড়ে আছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নেতৃত্বে আসার দৌঁড়ে এগিয়ে থাকাদের মধ্যে অন্যতম হলেন- বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য এবং কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের ১৬ সিরিজের শিক্ষার্থী সৌমিক সাহা, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকশনা সম্পাদক এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬ সিরিজের শিক্ষার্থী মো. ছালাতিজ্জোহা ইফতি, উপ-মানব সম্পদবিষয়ক সম্পাদক ইফতেখারুল হক দিগন্ত, উপ-দপ্তর সম্পাদক ও ইলেকট্রনিক এন্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ১৫ সিরিজের শিক্ষার্থী লাশিউর রহমান নাহিদ, কমিটির সহ-সভাপতি ও যন্ত্রকৌশল বিভাগের ১৪ সিরিজের শিক্ষার্থী এম. এম ওসমান হায়দার তমাল, সহ-সভাপতি ও পুরকৌশল বিভাগের ১৪ সিরিজের শিক্ষার্থী মো. ফাহমিদ লতিফ লিয়ন।
জানা গেছে, সহ-সভাপতি ফাহমিদ লতিফ সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ নিয়ে ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনে রুয়েটের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বেগবান করতে ‘রুয়েট কমন রুম’ নামের একটি ফেসবুক পেইজে লিখেছিলেন ‘আমরা আশা রাখি, যে যেই মতাদর্শের হই না কেন অন্যায়ের বিরোধীতা করবো একসাথে। সবার উপরে দেশ, এই দর্শনটাই দেশটাকে পাল্টাতে পারে। অন্যায়-অবিচার নিপাত যাক, বাংলার মানুষ মুক্তি পাক।’
এ বিষয়ে ফাহমিদ লতিফ লিয়ন বলেন, ‘আসলে কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরুর দিকে ছাত্রলীগই নেতৃত্বে ছিল। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমিও রুয়েট ক্যাম্পাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলাম। যখন দেখলাম, কোটা সংস্কার আন্দোলন ভিন্নখাতে প্রবাহিত হচ্ছে, তখনই আমি সেই আন্দোলন থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে কোনো ‘ক্লেম’ না পেয়ে আমার বিরোধীপক্ষ কোটা আন্দোলনটাকে সামনে আনার চেষ্টা করছে।’
আরেক সহ-সভাপতি লাশিউর রহমান নাহিদের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তিনি নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানিতে ইন্টার্নশিপ প্রোগাম করছিলেন। গত নভেম্বর মাসে তিনি ক্যাম্পাস ছাড়েন। তবে চলতি মাসের শুরুর দিকে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর ক্যাম্পাসে ফিরে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করেন।
ছাত্রলীগের উপ-মানব সম্পদবিষয়ক সম্পাদক ইফতেখারুল হক দিগন্তও রয়েছেন শীর্ষ পদের আলোচনায়। তবে ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রুয়েটের বঙ্গবন্ধু শেখ মুবিজুর রহমান আবাসিক হলের গেস্ট রুমে তার বিরুদ্ধে অবৈধ মালামালসহ অসামাজিক কাজে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় তৎকালীন হল প্রভোস্ট তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় পরে আর তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
জানতে চাইলে ইফতেখারুল হক দিগন্ত বলেন, ‘ওই দিন হলের গেস্টরুমে আরও বেশ কয়েকজন ছিলেন। সন্দেহের বশবর্তী হয়ে আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। আমি যদি দোষী হতাম তাহলে তদন্তসাপেক্ষে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হত। আসলে সম্মেলনকে ঘিরে অনেকেই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা-প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।’
রুয়েট ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি মোহা. ইসফাক ইয়াসশির ইপু বলেন, আলোচনায় যারাই থাকুক না কেন রুয়েট ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে তাদেরই আসা উচিত যারা ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করবে। একটি স্মার্ট ছাত্রলীগের ম্যান্ডেট নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করবে। তবে পরিচ্ছন্ন ইমেজ এবং সততা থাকতে হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে এদেশের যুবসমাজকে নিয়ে সামনের জাতীয় নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে বিজয়ী করে নিয়ে আসার যোগ্যতা যাদের থাকবে তাদেরকেই নেতৃত্বে আনা উচিত।’