ইবির ৫ ছাত্রী বহিষ্কার
কুষ্টিয়া প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২৩ ১৬:১৮ পিএম
আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২৩ ২১:০২ পিএম
ফুলপরী খাতুন। ফাইল ফটো
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে বহুল আলোচিত নবীন ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে র্যাগিংয়ের নামে নির্যাতনের পাঁচ মাস পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ তার চার সহযোগীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে এ সিদ্ধান্তে সঠিক বিচার পাননি বলে মনে করেন ভুক্তভোগী ফুলপরী খাতুন।
শনিবার (১৫ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ের ২০২ নং কক্ষে অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে নেওয়া সিদ্ধান্তের পর গণমাধ্যমের কাছে নিজের অসন্তোষের কথা জানান ফুলপরী।
তিনি বলেন, ‘তারা আমার ওপর যে পরিমাণ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে তাতে তাদের এক বছরের শাস্তি কোনোভাবেই হতে পারে না। এতে আমি সন্তুষ্ট নই, বরং আরও আতঙ্কিত। কারণ, তারা এক বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিরে এসে আমার ওপর প্রতিশোধ নেবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আমি মনে করি, আমি সঠিক বিচার পাইনি। আমি চাই তারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার হোক।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার বেলা ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুস সালামের সভাপতিত্বে শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতিতে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের ছাত্রী ফুলপরী খাতুন নির্যাতনের ঘটনায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন : ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন : অভিযুক্ত পাঁচজনকে বহিষ্কার
বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি এবং হাইকোর্টের নির্দেশে করা তদন্ত করা কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট কোড অব কন্ডাক্টের আলোকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অন্তরাসহ অভিযুক্ত পাঁচজনের প্রত্যেকের এক বছরের জন্য ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়েছে।
অন্তরাসহ বহিষ্কারাদেশ পাওয়া পাঁচজন হলেন-- ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও চারুকলা বিভাগের হালিমা খাতুন ঊর্মি। তারা ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অপরদিকে অন্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গত ১১ ও ১২ই ফেব্রয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে দুই দফায় ফুলপরী নামের এক নবীন ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠে। শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাচ্ছুম ও মোয়াবিয়া, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও ফাইন আর্টস বিভাগের হালিমা খাতুন ঊর্মির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠে। ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, হল প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগ এবং হাইকোর্ট কর্তৃক পৃথক পৃথকভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করে। এ ঘটনায় হাইকোর্টে রিট হয়। আদালতের নির্দেশে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। পরে তদন্ত প্রতিবেদনে নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা উঠে এলে অভিযুক্তদের হল ও শাখা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। একই সঙ্গে তাদেরকে উচ্চ আদালতের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।