বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২৩ ১৯:০৩ পিএম
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২৩ ১৯:৩৮ পিএম
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাফেটেরিয়াতে আড্ডা দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। প্রবা ফটো
গড়তে হলে ভাঙতে হয়। অধিকতর উন্নয়নের জন্য ভাঙা হয়, নতুন করে গড়া হয়—এটা অস্বাভাবিক নয়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) পুরোনো ক্যাফেটেরিয়া ভেঙে নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে। রবিবার (৯ জুলাই) সেই নতুন ক্যাফেটেরিয়ার নামফলকের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন।
দৃষ্টিনন্দন এই ক্যাফেটেরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু অ্যাকাডেমিক ভবনের পাশে নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি ডিজাইন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য ডিসিপ্লিন।গোলপাতার ছাউনিতে গ্রামবাংলার ছোঁয়া পেয়েছে ক্যাফেটেরিয়াটি। ওভাল শেপ আকারে নির্মিত এর আয়তন ৫ হাজার ৪০০ স্কয়ার ফিট। পূর্বের ক্যাফেটেরিয়ার মতো এখন থেকে শিক্ষার্থীরা খাবার খেতে পারবেন।
উপাচার্য মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু পরিবর্তন হবে—এটা স্বাভাবিক, তবে তা হতে হবে ইতিবাচক। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবেশ উন্নয়ন করাও জরুরি। এজন্য চলমান উন্নয়নকাজের গতি আরও ত্বরান্বিত করতে হবে।’
তবে এ ভাঙা-গড়ার মাঝে হাজারো স্মৃতি জমা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। এই তো কিছু দিন আগেও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে প্রাণোচ্ছ্বল ছিল। এখন সেই জায়গাটি ফাঁকা। নতুন স্থাপনা তৈরির জন্যই টিনের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে জায়গাটি।
হাজারো পুরোনো স্মৃতি যখন ভেঙে চুরমার, তখনোই নতুন স্মৃতি জমাতে তৈরি হয়েছে নবনির্মিত ক্যাফেটেরিয়া। শিক্ষার্থীদের পদচারণায় গল্প-আড্ডায় মুখরিত জায়গাটি। বোঝা যায় না আজকেই এটির উদ্বোধন করা হয়েছে। পুরোনো ক্যাফেটেরিয়া ভেঙে ফেলায় যেসব শিক্ষার্থীর মন খারাপ হয়েছিল, স্বস্তি ফিরে পেয়েছে, নতুনকে বরণ করে নিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আনিসুর রহমান হিমেল বলেন, ‘ক্যাফেটেরিয়া ভেঙে ফেলার কথা শুনে কষ্ট পেয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল, দুমড়েমুচড়ে কামড় বসিয়ে অদৃশ্য রক্তবন্যায় ভাসাচ্ছে আবেগ। যখন একেবারেই ভেঙে ফেলা হলো, তখন স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েছি। পুরোনো স্মৃতিগুলো শুধু রোমন্থন করেছি, অন্য কিছু ভাবতে পারিনি। নতুন ক্যাফেটেরিয়া দেখে স্মৃতিকাতর মন ভালো হয়ে গেছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সিফাতুল ইসলাম বলেন, ‘যখন পুরোনো ক্যাফেটেরিয়া ভাঙা হয়েছিল, তখন মন খারাপ হয়েছিল। অনেক দিনের আবেগ-অনুভূতি জড়িয়ে ছিল জায়গাটিতে। তবে নতুন তৈরি ক্যাফেটেরিয়াটি দেখে অনেক ভালো লাগছে। সেই আগের মতো আবার আড্ডা, গানে মেতে উঠবে জায়গাটি।’
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক খান গোলাম কুদ্দুস, ক্যাফেটেরিয়ার ডিজাইনার স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের প্রধান অধ্যাপক শেখ সিরাজুল হাকিম বক্তব্য দেন। সঞ্চালনা করেন উপরেজিস্ট্রার দীপক চন্দ্র মণ্ডল। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডিন, ডিসিপ্লিনপ্রধানসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।