বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ জুন ২০২৩ ২২:২৪ পিএম
আপডেট : ২২ জুন ২০২৩ ২২:২৯ পিএম
ওলান ফোলা এবং ওষুধ প্রতিরোধী জীবাণু সণাক্তকরণ ও ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্পের সমাপনী কর্মশালায় বক্তারা। প্রবা ফটো
দুধেল গাভীর অন্যতম রোগ হলো ম্যাসটাইটিস বা ওলান ফোলা রোগ। নীরব ঘাতক হিসেবে পরিচিত রোগটি দুই ধরনের হয়ে থাকে- ক্লিনিক্যাল ও সাব ক্লিনিক্যাল। লক্ষণ দেখে ক্লিনিক্যাল ম্যাসটাইটিস সহজে নির্ণয় করা যায়। কিন্তু লক্ষণ প্রকাশ না করায় সাব ক্লিনিক্যাল ম্যাসটাইটিস সহজে নির্ণয় করা যায় না। ওলান ফোলা রোগ হলে দুধের উৎপাদন কমে যায়। এতে খামারিদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। দেশের ২৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ গাভীর ওলানের এক চতুর্থাংশ সাব ক্লিনিক্যাল ম্যাসটাইটিসে আক্রান্ত।
‘নিরাপদ দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার ডেইরি মিল্কে ওলান ফোলা এবং ওষুধ প্রতিরোধী জীবাণু সণাক্তকরণ ও ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্পের সমাপনী কর্মশালায় এসব কথা জানান প্রকল্পের প্রধান গবেষক ও প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক আবু হাদী নূর আলী খান। বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভেটেরিনারি অনুষদের মেডিসিন সম্মেলন কক্ষে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
আবু হাদী নূর আলী খান জানান, সাব ক্লিনিক্যাল পর্যায়ে এই রোগটি নির্ণয়ের জন্য দেশে ডিজিটাল যন্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়েছে। যন্ত্রটির মাধমে দুধের বৈদ্যুতিক পরিবাহিতা ও দ্রবীভূত মোট কঠিন পদার্থের পরিমাণ নির্ণয়ের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। যন্ত্রটি ব্যবহার করে মাঠ পর্যায়ে কম সময়ে, খুব সহজে ও সুলভ মূল্যে রোগ নির্ণয় সম্ভব। রোগ নির্ণয় করে সময়মত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারলে খামারিরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি থেকে মুক্তি পাবেন।
তিনি আরও জানান, রোগটির প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পেতে দুধ দোহানোর আগে ও পরে জীবাণুনাশকের সাহায্যে গাভীর ওলান পরিষ্কার করতে হবে। পরে শুকনো কাপড় দিয়ে ভেজা ওলান মুছে দিতে হবে। গাভীর জন্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন খামার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ম্যাসটাইটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব। এ বিষয়ে ডেইরি খামারিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া জরুরি বলেও জানান তিনি।
নিরাপদ দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশের পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। বাংলাদেশ শিক্ষা, তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) অর্থায়নে পরিচালিত এ গবেষণায় গত দুই বছরে ৩৯ খামারের ১০০ গাভীর ওপর ম্যসটাইটিসের জীবাণু শনাক্তকরণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
কর্মশালায় গবেষণা প্রকল্পের সহযোগী গবেষক ও প্যাথলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মুনমুন পারভীনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাকৃবির চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক মো. আব্দুল আউয়াল। গবেষণার সাথে সংশ্লিষ্ট পিএইচডি ফেলো তাসনিয়া তাবাসসুম আনিকাসহ ভেটেরিনারি অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।