জাবি সংবাদদাতা
প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৩ ১২:৫৯ পিএম
আপডেট : ১২ জুন ২০২৩ ১৩:৪২ পিএম
ছাত্রী হেনস্থার অভিযোগে আটক পুলিশ সদস্য। প্রবা ফটো
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রীকে হেনস্থার অভিযোগে এক পুলিশ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। রবিবার (১১ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য (কনস্টেবল) মেহমুদ হারুন নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনসে কর্মরত। এ ঘটনায় সোমবার তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এদিকে মামলার পর হারুনের এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন সড়কে এক ছাত্রীকে হেনস্থা করেন ওই পুলিশ কনস্টেবল ও তার সঙ্গী এক যুবক। এ সময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মীর মশাররফ হোসেন হলে থাকা তার বন্ধুদের বিষয়টি জানান। পরে অভিযুক্ত মেহমুদ হারুন হলের পাশে দোকানের সামনে গেলে ভুক্তভোগীর বন্ধুরা তাদের ধাওয়া করেন। অভিযুক্তরা তখন এমএইচ হল সংলগ্ন গেট দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ কনস্টেবলের সঙ্গে থাকা ব্যক্তি পালিয়ে গেলেও ওই কনস্টেবলকে ধরে ফেলেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাকে মারধর করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় হস্তান্তর করা হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনের রাস্তা দিয়ে হলে ফিরছিলাম। বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনের মোড়ে যখন আসি তখন দুজন লোক আমার গতিরোধ করে এবং আমি ক্যাম্পাসের কি না জিজ্ঞাস করে। আমি তাদের পরিচয় দিই। কিন্তু পরক্ষণেই তাদের আচরণে বুঝি যে তারা ক্যাম্পাসের না। আমি চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে তারা এ সময় আমার পথ আটকায় এবং আমাকে হেনস্থা শুরু করে। একপর্যায়ে আমাকে ‘জঙ্গলে চলো’সহ এরকম আরও আপত্তিকর কথা বলা শুরু করে।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘তারা আমার ফোন নম্বর চায়। ওই মুহূর্তে আমি দ্রুত একটা রিকশায় উঠে চলে যেতে চাইলে তারা বারবার রিকশা থামায় এবং আমার মোবাইল নম্বর দিতে জোরাজুরি করে। একপর্যায়ে আমি কোনোভাবে রিকশাওয়ালার সহায়তায় ওই স্থান ছেড়ে মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে এসে আমার বন্ধুদের কল দিই। এ সময় হলের সামনের চায়ের দোকানে ওই দুই ব্যক্তিকে আবার দেখতে পাই এবং তাদের ধরতে গেলে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে আমি এবং আমার বন্ধুরা একজনকে ধরতে পারি এবং বাকি একজন পালিয়ে যায়।’
অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল মেহমুদ হারুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কাছে অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তাকে আটকের সময় তার কাছে অবৈধভাবে ব্যবহার করা হ্যান্ডকাফ, ওয়াকিটকি ও আইডি কার্ড পাওয়া যায়।
মামলার বাদী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য প্রাথমিকভাবে তার দোষ স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আসামিকে আশুলিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, পালিয়ে যাওয়া পুলিশ সদস্যের সহযোগীকে দুপুরের দিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি জেনেছি। সে যা করেছে তা আমাদের পুলিশদের জন্য অসম্মানের। অফ ডিউটিতে থাকাকালে সে ওয়াকিটকি ও হ্যান্ডক্যাফ ব্যবহার করেছে, যা অবৈধ। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে সে যেন সর্বোচ্চ শাস্তি পায়, সে ব্যবস্থা করা হবে।’