বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৩ ২২:১৯ পিএম
আপডেট : ২৫ মে ২০২৩ ২২:২০ পিএম
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশত বছরের পুরনো কাঠলিচু গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে। প্রবা ফটো
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইআর) এবং পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান ফটকের পাশের অর্ধশত বছরের পুরনো কাঠলিচু গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে না জানিয়ে বিশালাকৃতির গাছটি কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ঈমাম মো. ছালাহ্ উদ্দীনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন ওই ঈমাম।
বুধবার (২৪ মে) রাত নয়টার পর থেকে সারারাত ধরে গাছটি কাটা হয়। নারিকেল গাছের ডালপালা কাটার অনুমতি নিয়ে কাটলিচু গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে। গাছটির অল্প কিছু ডালপালা মসজিদের টিনের চালের উপরে ছিল। তবে অর্ধশত বছরের পুরনো গাছটি কোনো বড় কারণ ছাড়াই কেটে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম, বৃক্ষরোপণ ও কর্তন কমিটির সদস্যরা গাছ কাটার স্থান পরিদর্শন করেন। এরপর বিষয়টি উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে অবগত করেন।
গাছ কাটার কাজ পাওয়া লিটন বলেন, ‘বড় হুজুর (ছালাহ্ উদ্দীনে) আমাকে গাছ কাটতে বলেছেন। উনি আমাকে দুই হাজার টাকা ও ডালপালা, লাকড়ি নিয়ে যেতে বলেছেন, বিনিময়ে গাছটি কেটে ফেলতে বলেন। আমি লোকজন নিয়ে সারারাত ধরে গাছটি কেটেছি।’
এ বিষয়ে মসজিদের ঈমাম ছালাহ্ উদ্দীন বলেন, ‘মসজিদের যেন ক্ষতি না হয় সেজন্য গাছটি কাটতে বলেছিলাম। সাবেক ট্রেজারার আমাকে বলেছিলেন গাছের জন্য কোনো সমস্যা হলে সেটা কেটে ফেলতে। তবে কাউকে না জানিয়ে গাছটি কাটা আমার অন্যায় হয়েছে। আমি এ ঘটনায় ক্ষমাপ্রার্থী।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠলিচু গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে। এটার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনুমোদন নিয়েছে কি-না দেখতে হবে। যদি অনুমোদন না নিয়ে থাকে তাহলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি আজ (বৃহস্পতিবার) সারাদিন সচিবালয়ে ছিলাম। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না, আমাকে কেউ কিছু জানায়নি।’
মসজিদ কমিটির দায়িত্বে থাকা কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আমি নারিকেল গাছের ডালপালা ছাটাইয়ের বিষয়ে অবগত ছিলাম। গাছ কাটার ব্যাপারে আমাকে জানানো হয়নি। আমি সংবাদ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঈমামকে চার্জ করেছি এবং বিষয়টি উপাচার্যকে অবগত করেছি। তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, ‘আমি সম্পত্তি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছি সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য। রিপোর্ট হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। বিশ্ববিদ্যালয়ের গাছ কাটার অধিকার কারো নেই। এখানে কমিটি আছে তাদের মতামত নিয়ে গাছ কাটতে হবে। সবকিছুই নিয়মের মধ্যে থেকে করতে হবে। শনিবার গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা রয়েছে তাই সেই জায়গা পরিষ্কার করার নির্দেশ দিয়েছি।’