কুড়িগ্রাম প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৩ ২০:২৬ পিএম
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৩ ২০:৪৯ পিএম
প্রতীকী ছবি।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে শিক্ষার্থীদের দেওয়া ট্যাব ফেরত নেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রেণির প্রথম থেকে তৃতীয় ক্রমিকের (রোল নম্বর) শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ না করে অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করার অভিযোগে ট্যাবগুলো ফেরত নেওয়া হয়।
রবিবার (১৬ এপ্রিল) বিকালে এই তথ্য জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা জাহান। এ ঘটনায় বিব্রত অবস্থায় পড়েছেন ট্যাব পাওয়া শিক্ষার্থী ও তার পরিবারের লোকজন।
নোটিস থেকে জানা যায়, ২৮ মার্চ উপজেলার কেদার ইউনিয়নের সুবলপাড় বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম ও দশম শ্রেণির ছয় শিক্ষার্থীকে উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসে ডেকে ছয়টি ট্যাব দেওয়া হয়।
উপহার পাওয়া এসব ট্যাব শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করছিল। এ অবস্থায় ১৫ এপ্রিল সুবলপাড় বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সফিক সরকার ছয় শিক্ষার্থীকে দুই দিনের মধ্যে ট্যাব ফেরত দিতে নোটিস করেন। এতে উল্লেখ করেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দুই দিনের মধ্যে ট্যাবগুলো ফেরত চেয়েছেন।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে ট্যাব বিতরণের শর্ত ছিল নবম-দশম শ্রেণির প্রথম থেকে তৃতীয় ক্রমিকের শিক্ষার্থীরা পাবে। কিন্তু বিদ্যালয়ের নবম ও দশম শ্রেণির ওই রোল নম্বরের মধ্যে কেউ বিদ্যালয়ে আসে না, এমন অভিযোগে অন্য শিক্ষার্থীদের তালিকা পাঠানো হয় পরিসংখ্যান অফিসে। পরে তাদের ডেকে ট্যাব দেওয়া হয়।
প্রধান শিক্ষক আব্দুস সফিক সরকার বলেন, ’দু:খজনক হলেও সত্য নবম-দশম শ্রেণির যাদের রোল তিনের মধ্যে তারা স্কুলে আসে না। সারা বছর কোচিং করে পরীক্ষায় সময় পরীক্ষা দিয়ে যায়। পরিসংখ্যান কর্মকর্তা বলছিলেন ছয়টি নাম দিতে। পরে নিয়মিত উপস্থিত মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে তালিকা করা হয়েছিল। তালিকা করা তিন শিক্ষককেও শোকজ করা হয়েছে।
এদিকে ট্যাব ফেরত দেওয়ার বিষয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। এক অভিভাবক বলেন, তার মেয়ে কান্নাকাটি করছে। আর স্কুলে যাবে না। তিনি বলেন, আমরা তো ট্যাব চাইনি। দেওয়া হলো কেন? নেওয়া হলো কেন?
আরেক অভিভাবক বলেন, তার মেয়ে শতভাগ স্কুলে উপস্থিত থাকে বলে তাকে দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছেন। বিতরণের আগে বিষয়টি ভালো করে দেখা উচিত ছিল।
উপজেলা পরিসংখ্যান তদন্তকারী কর্মকর্তা মাসুম মিয়া বলেন, ’একজনের মৌখিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তে গিয়ে বিষয়টির সত্যতা মিলেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক ভুল তথ্য দিয়েছিলেন। সত্যতা পাওয়ায় ট্যাব ফেরত দিতে ইউএনও চিঠি দিয়েছেন।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা জাহান বলেন, ’যাদের নাম দেওয়া হয়েছিল তারা এক থেকে তিনের মধ্যে নেই। এ নিয়ে মৌখিক অভিযোগ পেয়ে পরিসংখ্যান কর্মকর্তা তদন্তে গিয়ে সত্যতা পান। ১৩ এপ্রিল ট্যাবগুলো অক্ষত অবস্থায় দুই দিনের মধ্যে ফেরত দিতে বলা হয় এবং ফেরত পাওয়া গেছে। যাচাই-বাছাই করে এগুলো বিতরণ করা হবে।’