বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৩ ১৩:৪৫ পিএম
আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:৪০ পিএম
ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা। ফাইল ছবি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আবাসিক হলে ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় নিজের অংশগ্রহণ ছিল না দাবি করে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা তার সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেছেন। একই সঙ্গে একাডেমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ ও তার স্থগিত হওয়া তৃতীয় বর্ষের ফল প্রকাশের অনুরোধ জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচএম আলী হাসান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে আবেদন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচএম আলী হাসানের কাছে বুধবার (১২ এপ্রিল) এ-সংক্রান্ত একটি আবেদন জমা দিয়েছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরা।
আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন : বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আমাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আমি বর্তমানে শেষ বর্ষে অধ্যয়নরত। অনলাইনে ক্লাস চলমান। আপনার (রেজিস্ট্রার) দপ্তর থেকে আমাকে দুই দফায় যে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে সেখানে সুনির্দিষ্ট কোনো অপরাধ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনির্দিষ্ট কোনো ধারা উল্লেখ করা হয়নি। আমি দৃঢ়চিত্তে বলতে পারি, আমি উক্ত র্যাগিংয়ের ঘটনায় কোনোভাবেই অংশ নিইনি।
আবেদনে সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি ও তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের অনুরোধ জানান অভিযুক্ত অন্তরা।
এ বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ইবির পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন বলেন, ‘ফল স্থগিতের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভালো জানে। বিভাগ রেজাল্ট সাবমিট করার সময় কর্তৃপক্ষকে চিঠিতে দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় তাকে (অন্তরা) সাময়িক বহিষ্কার করেছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুরোধ করা হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচএম আলী হাসান বলেন, ‘আবেদনটি পেয়ে একাডেমিক শাখায় পাঠিয়েছি। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন প্রশাসকের অফিসে মতামত চেয়ে পাঠানো হবে। তার মতামত নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’
উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যাবতীয় শিক্ষা কার্যক্রম থেকে তাকে (অন্তরা) অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে। কখন পরীক্ষা হয়েছে সেটা মুখ্য বিষয় নয়।’
১২ ফেব্রুয়ারি ইসলামী বিশ্ববিদ্যায়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে নবীন ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে রাতভর আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরার নেতৃত্বে তার অনুসারীরা সেদিন তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালাগাল এবং এ ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। অভিযোগ তদন্তে হল প্রশাসন, ছাত্রলীগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসন কমিটি তদন্ত করে। তিন কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে নির্যাতনের সত্যতা উঠে আসে।
৪ মার্চ ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ পাঁচ ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।