বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৩ ২১:১০ পিএম
আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২৩ ২১:৩৪ পিএম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক। সংগৃহীত ছবি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ফুলপরী খাতুন নামের এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের কারণ দর্শানোর সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বুধবার (২৯ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান স্বাক্ষরিত তিনটি পৃথক প্রজ্ঞাপনে এই সময় বাড়ানো হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, অভিযুক্তরা আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত কারণ দর্শাতে পারবেন। এরপর আর সময় বাড়ানো হবে না বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
নির্যাতনের ঘটনায় ৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে পাঁচ অভিযুক্তকে সাময়িক বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। এ সময় সাত কার্যদিবসের মধ্যে কেন তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না—এ মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়। ১৫ মার্চের মধ্যে অভিযুক্তদের জবাব দিতে বলা হয়েছিল। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শুধু ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া জাহান জবাব দেন।
নির্ধারিত সময়ে জবাব দেননি পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মিম ও চারুকলা বিভাগের হালিমা আক্তার উর্মি। তারা জবাব না দিয়ে সময় বৃদ্ধির আবেদন করেন। একই সঙ্গে তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদনের কপি চান।
তাদের আবেদন রেজিস্ট্রার দপ্তরে জমা হয়। নিয়ম অনুযায়ী ফাইল চলে যায় একাডেমি শাখার উপরেজিস্ট্রার আলীবদ্দীন খানের কাছে। তিনি দেখে ফাইলটি পাঠিয়ে দেন রেজিস্ট্রার দপ্তরে। রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে মতামতের জন্য ফাইল ১৪ মার্চ আইন প্রশাসকের দপ্তরে পাঠানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় ও তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বেখেয়ালিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আটকে আছে। বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর নজর দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান বলেন, ’ফাইলটি এত দিন আইন প্রশাসকের দপ্তরে আটকে আছে। তিনি তার মতামত দেবেন। পরে উপাচার্যের কার্যালয়ে এলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।‘
এদিকে ফুলপরীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করা মোবাইলটি এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর মোবাইল ফোনটি উদ্ধারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর চিঠি দেয়। তবে ফোনটি এখনও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আননূর যায়েদ বিপ্লব।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, ’উচ্চ আদালতের পূর্ণাঙ্গ নির্দেশনার কপি আমাদের হাতে আসার পর নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ৭ মার্চ মোবাইল ফোনটি উদ্ধারের জন্য রেজিস্ট্রার ইবি থানায় লিখিত চিঠি দিয়েছেন।’
ওসি আননূর যায়েদ বিপ্লব জানান, এখনও উদ্ধার হয়নি। উদ্ধার কার্যক্রম এখনও চলমান রয়েছে।
১২ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ফুলপরী খাতুনকে আটকে রাতভর নির্যাতন করা হয়। তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালাগাল এবং এ ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। বিষয়টি নিয়ে হল প্রশাসন, ছাত্রলীগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের গঠিত কমিটি তদন্ত করে। তিন কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে নির্যাতনের সত্যতা মিলেছে।