রাজশাহী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২৩ ১৯:৫৮ পিএম
আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৩ ২০:১৬ পিএম
হবিবুর রহমান হল। ছবি সংগৃহীত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হলে সিট দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার (২৬ মার্চ) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের ৪০৪ নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ফয়সাল আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি ওই হলের ৪০৪ নম্বর কক্ষে থাকেন।
তার অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক মনিরুল ইসলাম স্বপন ২০ থেকে ২৫ জন সহযোগী নিয়ে তাকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। অভিযুক্ত মনিরুল একই হলের ৩০৫ নম্বর কক্ষে থাকেন।
ভুক্তভোগী ফয়সাল জানান, রবিবার বিকালে মনিরুল তার কক্ষে গিয়ে সিট ছেড়ে চলে যেতে বলেন। চলে না গেলে প্রাণে মারার হুমকি দেন এবং আহাদ নামে অ্যাকাউন্টিং বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের এক শিক্ষার্থীর জিনিসপত্র তার কক্ষে রেখে যান। এরপর রাত সাড়ে আটটার দিকে মনিরুল আবার ২০-২৫ জনসহ তার কক্ষে যান।
ফয়সাল বলেন, ‘’রাতে আবার মনিরুল ২০-২৫ সহ আমার কক্ষে এসে বলে যে, ‘তোকে না রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেছিলাম? তুই এই রুমে এখনও কী করিস? হল কি তোর বাপের? আমার এই ব্লকে থাকতে হলে আমাকে টাকাপয়সা দিয়ে থাকতে হবে।’ তখন আমি প্রতিবাদ করলে আমার গেঞ্জির কলার ধরে কক্ষ থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করার চেষ্টা করে। কিন্তু আমি বের না হলে, সবাই এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে মনিরুল লাঠি দিয়ে আমার হাতে আঘাত করেন এবং আমার বিছানাপত্র বাইরে ফেলে দেন।’
মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মনিরুল ইসলাম স্বপন। তিনি বলেন, ’ওই সিটে অ্যাকাউন্টিং বিভাগের আহাদ নামের এক ছোট ভাইকে অ্যালট দিয়েছে। তাই তাকে অন্য সিটে যেতে বলা হয়। কিন্তু সে উল্টা আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করে। তখন উভয়ের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। তবে মারধরের অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ’মারধরের বিষয়টি আমি জানি না। তবে সিট দখল কিংবা মারধরের ঘটনায় ছাত্রলীগের কারও সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ হলে, তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ ড. শরিফুল ইসলাম বলেন, ’রবিবারে আমি ছুটিতে ছিলাম। রাতে বিষয়টি শোনার পরে দুপক্ষের সঙ্গেই মোবাইলে কথা বলেছি। অভিযোগকারী ফয়সালকেই ৪০৪ নম্বর রুমে বরাদ্দ দেওয়া আছে। কিন্তু মনিরুল (ছাত্রলীগ নেতা) তৃতীয় তলায় বরাদ্দ দেওয়া আছে, এমন এক ছেলেকে ফয়সালের সিটে ওঠাতে চেয়েছিল। আমি সকালের মধ্যে মনিরুলের ওই ছেলেকে তার বরাদ্দকৃত সিটে (তৃতীয় তলায়) চলে যেতে বলেছি। সকালেও হলে গিয়েছিলাম, কিন্তু অত সকালে ওদেরকে আর ডাকিনি। ফোনে কথা হয়েছে। ওই ছেলে কথা না শুনলে (নিজের সিটে না গেলে) পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে কথা হয় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ’আহাদ সকালে ঘুম থেকে উঠে বাইরে গেছে, এখনও রুমে ফেরেনি। তবে তার জিনিসপত্র এখনও ৪০৪ নম্বর কক্ষেই আছে।’