বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৩ ১৯:৩৫ পিএম
আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৩ ১৯:৫৭ পিএম
জাতীয় গণহত্যা দিবস স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক মানববন্ধনে এসব দাবি জানায় ছাত্রলীগ নেতারা। প্রবা ফটো
গণহত্যার সাংবিধানিক ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, ‘গণহত্যা অস্বীকৃতি আইন’ প্রবর্তন, পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা প্রার্থনা এবং স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াত-শিবিরকে আইনগতভাবে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, জামায়াত-শিবিরকে আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ করা ছাত্রসমাজের প্রাণের দাবি।
শনিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে জাতীয় গণহত্যা দিবস স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধনে এসব দাবি জানায় ছাত্রলীগ নেতারা। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ মানববন্ধনের আয়োজন করে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন।
ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘গণতন্ত্রের কথা বলে যারা রাজাকারদের পুনর্বাসনের রাজনীতি করে, যারা পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজকে সোচ্চার হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘একাত্তরের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের কিছু দাবি রয়েছে। একাত্তরের গণহত্যা আমাদের সংবিধানের অংশ হওয়া উচিত বলে মনে করি। সংবিধানে আলাদা একটি অনুচ্ছেদ হিসেবে যেন গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়া হয়।’
পাশাপাশি ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিকভাবে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
‘গণহত্যা অস্বীকৃতি আইন প্রবর্তন’ করার আহ্বান জানিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের গণহত্যা ও বাংলার মায়েদের সম্ভ্রমহানি নিয়ে যারা তামাশা করে এবং ৩০ লাখ মানুষের জীবন নিয়ে যারা মশকরা করে, তাদের যেন আমরা আইনের আওতায় শাস্তি দিতে পারি। অবিলম্বে “গণহত্যা অস্বীকৃতি আইন” পাস করে, সেটি নিশ্চিত করার জন্য আমরা সরকারকে আহ্বান জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাহাত্তরের সংবিধানে ধর্মকে রাজনীতির হাতিয়ার করার কোনো সুযোগ ছিল না। অবৈধ সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান সংবিধান পরিবর্তন করেন। এর মাধ্যমে ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে। যারা যুদ্ধাপরাধের দায়ে সম্পৃক্ত আছে, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও স্পষ্টভাবে ঘোষিত হয়েছে যে জামায়াত সরাসরি যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত। আমরা মনে করি, জামায়াত-শিবিরকে আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ করার সময় এসেছে। এটি ছাত্রসমাজের প্রাণের দাবি।’
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ‘আমাদের আগামীর বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। সেই স্মার্ট বাংলাদেশের সংবিধান হবে স্মার্ট সংবিধান। স্মার্ট সংবিধানে জাতীয় পতাকা ও রাষ্ট্রের মূলনীতিগুলোর উল্লেখ যেভাবে থাকবে, সেভাবে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভে সংঘটিত সেই বর্বরোচিত গণহত্যার বিষয়টিও সাংবিধানিকভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। আমরা বাংলাদেশের সাধারণ ছাত্র জনতার পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে দাবি জানাই।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন এবং সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত। এ সময় ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।