প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৩ ১৯:৪৭ পিএম
আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৩ ২০:১৩ পিএম
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এমপি। প্রবা ফটো
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তিহার ৯৮ শতাংশে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এমপি। তিনি বলেছেন, সরকারের নানামুখী উদ্যোগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার ৯৮ শতাংশে পৌঁছেছে; ঝরে পড়ার হার আগের চেয়ে কমেছে। শিক্ষকদের বদলির দুশ্চিন্তা কমেছে। প্রাক-প্রাথমিক স্তর এক বছরের পরিবর্তে দুই বছর করে সেখানে আনন্দের সঙ্গে লেখাপড়া করার সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
রবিবার (১২ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ’মিড ডে মিলের মাধ্যমে স্কুল ফিডিং কার্যক্রম আবারও শুরু করা হবে। এটি হবে পাঠ্যবইয়ের মতো প্রধানমন্ত্রীর আরেকটি উপহার। এখনও যেখানে শিক্ষক কম, সেখানে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।’
জাকির হোসেন বলেন, ’চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার পুরোনো ধারার শিক্ষার খোলনলচে পাল্টে এমন এক নতুন শিক্ষার বীজ বপনের কাজে হাত দিয়েছে, যা শিক্ষার্থীর মস্তিষ্ক থেকে মুখস্থ বিদ্যার বোঝা ঝেড়ে ফেলে তাদের কৌতূহল, জিজ্ঞাসা, অনুসন্ধান, গবেষণা ও ভাবনার শক্তিকে জাগাবে এবং নেতৃত্বের গুণাবলি তৈরিতে উপযোগী করে তুলবে।’
জাকির হোসেন আরও বলেন, ’করোনাকালীন সাময়িক বিরতির পর আবারও জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের নবতর পথপরিক্রমার সূচনা হলো।’ তিনি দেশবাসীকে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৩-এর শুভেচ্ছা জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার দীক্ষা’। শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর দেশব্যাপী ক্রীড়া ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা, শিক্ষামেলাসহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ঢাকায় জাতীয় অনুষ্ঠানে ২০১৯ ও ২০২২ সালের প্রাথমিক শিক্ষা পদক বিতরণ করা হয়। ২০১৯ সালে ২১ ক্যাটাগরিতে ২১ জন, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৯০ শিশুসহ ১১১ জন, ২০২২ সালে ২১ ক্যাটাগরিতে ২১ জন, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৮৪ শিশুসহ ১০৫ জন এই পদক পেয়েছেন। এ ছাড়া ২০২২ সালে ২১ ক্যাটাগরিতে ৪২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সনদ দেওয়া হয়।
পদকপ্রাপ্তরা ২০১৩-এর পদক নীতিমালা অনুযায়ী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকারী শিশুরা যথাক্রমে ২০ হাজার টাকা, ১৫ হাজার টাকা ও ১০ হাজার টাকাসহ একটি সার্টিফিকেট ও একটি ক্রেস্ট পেয়েছে। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে বিজয়ীরা ২৫ হাজার টাকা, একটি সার্টিফিকেট ও একটি ক্রেস্ট পেয়েছেন।
সভাপতির বক্তৃতায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব বলেন, ’সরকার সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষক নিয়োগ, অনলাইনে বদলি, শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাকে দুই বছরে উন্নীতকরণ, নতুন পাঠ্যক্রম প্রণয়ন, প্রাথমিক বৃত্তি প্রদানসহ প্রাথমিক শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধির জন্য একগুচ্ছ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে প্রাথমিক শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন প্রাণের সঞ্চার হবে।’
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, ’মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর আগামী দিনের সুনাগরিক গড়ে তুলতে শিশুদের শিক্ষার জন্য সর্বোচ্চ আন্তরিকতায় কাজ করে যাচ্ছে।’