নোয়াখালী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:৫৮ পিএম
আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:৫৯ পিএম
শ্রেণিকক্ষ সংকট সমাধানসহ তিন দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী। রোববার (১৫ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে অবস্থান কর্মসূচিতে এ ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় দাবি আদায়ে তাদের বিভিন্ন স্লোগান দিতেও দেখা যায়।
দাবি গুলো হলো ক্লাস রুম বরাদ্দ দিতে হবে, লাইব্রেরিতে বই সংযুক্ত করতে হবে এবং অফিস সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সমাজকর্ম বিভাগ প্রতিষ্ঠার তিন বছর পেরিয়ে গেলেও মাত্র একটি শ্রেণিকক্ষ দিয়ে পাঠদান চলছে। অন্য একটি বিভাগের সঙ্গে অফিস কক্ষ শেয়ার করলেও নেই নিজস্ব সেমিনার কক্ষ ও বই। এতে করে তিন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সারা দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করতে হয়। ক্লাস না থাকলে লাইব্রেরিতে পড়তে গেলেও সেখানে বিভাগের কোনো বই না থাকায় নানান সমস্যায় পড়ছেন তারা।
সমাজকর্ম বিভাগের তৃতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. ত্বকী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘একটা ক্লাসে তিনটা ব্যাচের ক্লাস হয়। সকালে একটা ক্লাস হলে বিকেলে আরেকটা ক্লাস হয়। এতে করে সারা দিন ভার্সিটিতে থাকতে হয়। লাইব্রেরিতে গিয়ে বই পড়ব তারও সুযোগ নাই। সেখানে আমাদের বই নাই।’
একই ব্যাচের তিলোত্তমা দাস বলেন, ‘নতুন আরেকটা ব্যাচ আসবে কিছুদিনের মধ্যেই কিন্তু ক্লাস রুম মাত্র একটা। কোনো সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি না। বলা যায় এটি মেরুদণ্ডহীন ডিপার্টমেন্ট। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি না। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত সকল কিছুর ব্যবস্থা করুক। শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করুক।’
শিক্ষার্থী আফরোজা বলেন, ‘শিক্ষক সংকটও রয়েছে আমাদের। তিনজন শিক্ষক দিয়ে আমাদের তিনটা ব্যাচ পড়ানো হচ্ছে। সেমিস্টারের আগে ছুটি থাকার কথা থাকলেও তখনও ক্লাস সিটি থাকে। এতে করে আমাদের অসুবিধা হয়।’
প্রথম ব্যাচের শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের শিক্ষকরা আমাদের বলেছেন ১৫ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা করবেন। আমরা কেবল আশ্বাস চাই না, আশ্বাসের বাস্তবায়ন চাই। ১৫ দিনের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করব।’
সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক চয়ন শিকদার বলেন, ‘শ্রেণিকক্ষ, অফিসকক্ষ না থাকায় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আমাদেরও অনেক অসুবিধা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১৫ দিনের সময় দিয়েছে। সমাধানের আশ্বাস পেয়ে শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন। আশা করি ১৫ দিনের মধ্যেই সমাধান হয়ে যাবে।’
সব দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক শাহিন কাদির ভূঁইয়া বলেছেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের দাবিগুলো নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। স্যার, শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নে আন্তরিক। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাদের জন্য নতুন কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হবে। অন্য দাবিগুলোও দ্রুত সমাধান করা হবে।’