× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কেন পড়বেন সমাজবিজ্ঞান

আবদুল্লাহ আল মামুন

প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২২ ১২:০৩ পিএম

আপডেট : ১৮ আগস্ট ২০২২ ১৩:১০ পিএম

কেন পড়বেন সমাজবিজ্ঞান

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি জায়গা যেখানে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে চান্স পেতে হয়। আর এখানে পড়াশোনা করার জন্য লাখ লাখ শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এতো ভর্তি পরীক্ষা নয় যেন ভর্তিযুদ্ধ। কিন্তু বিগত দুই বছর ধরে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় সম্মিলিত হয়ে একটাই প্রশ্ন করে ভর্তি পরীক্ষায়। যা গুচ্ছ পরীক্ষা নামে পরিচিত।

কিন্তু পূর্ববর্তী সময়ে প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হতো। এতে শিক্ষার্থীরা আর্থিকভাবে যেমন সমস্যার সম্মুখীন হতো, তেমনি অল্প সময়ে অনেক ছোটাছুটি করতে হতো। কিন্তু একটু পরীক্ষা খারাপ হলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যেত। বিশেষ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে ছড়িয়ে আছে। ফলে সব শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা দিতে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া সম্ভব হতো না। কিন্তু গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে একজন শিক্ষার্থী কাঙ্ক্ষিত মার্ক পেয়ে তার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায়। এতে সময় সাশ্রয় হচ্ছে, পাশাপাশি ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে না।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার পর অনেক শিক্ষার্থী দ্বিধায় থাকে। কারণ তারা বুঝতে পারে না কোন সাবজেক্ট চয়েস আগে দিবে। সাধারণত সব সাবজেক্টের মূল্য আছে। তবুও নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার উপর নির্ভর করে বিষয় চয়েস দেওয়া যেতে পারে। যদিও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চাইলেই সেই বিষয় পাওয়া যায় না। তার মেধাক্রমের এর ভিত্তি করে সে বিষয় পায়। সবচেয়ে বড় কথা নিজের মনের কথা প্রাধান্য দিতে হবে। বুঝতে হবে মন কি চায়? আমরা সামাজিক জীব। আমরা সবাই সমাজে বাস করি। আর একে অপরের সাহায্য ছাড়া চলতে পারি না। আমরা যা কিছু করি না কেন সমাজ আমাদের জন্য অত্যাবশকীয়। তাই পড়ার বিষয় হিসেবে সমাজবিজ্ঞান প্রথম পছন্দ হতে পারে।

সমাজবিজ্ঞান হলো সমাজ সম্পর্কিত বিজ্ঞান। অর্থাৎ সামাজিক বিজ্ঞানের যে যে শাখায় সমাজ নিয়ে আলোচনা, বিশ্লেষণ, যাচাই করে তাকে সমাজবিজ্ঞান বলে। এর জনক হলো ফরাসি সমাজ চিন্তাবিদ অগাস্ট কোঁৎ। তিনি প্রথম সমাজবিজ্ঞানের ধারণা দেন ১৮৩৯ সালে। শুরুতে এর নাম ছিল ঝড়পরধষ চযুংরপং. কিন্তু নাম পরিবর্তন করে ঝড়পরড়ষড়মু রাখা হয়। সমাজবিজ্ঞান  প্রত্যয়টি মূলত ১৮৩৯ সালে ব্যবহার করা হলেও এর যাত্রা শুরু হয় অনেক আগে। প্রাচীন কালে মুসলিম সমাজ চিন্তাবিদ ইবনে খালদুন তৎকালীন সময়ে সমাজ নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি একটি গ্রন্থ রচনা করেন 'আল-মুকাদ্দিমা।' কিন্তু সমাজ নিয়ে তিনি ধারণা সম্পূর্ণ করতে পারে নি। তবে তার চিন্তাধারায় সমাজের অনেক বিষয় তুলে ধরেছিল। তাই তাকে সমাজবিজ্ঞানের প্রকৃত জনক বলা হয়।

বাংলাদেশে সমাজবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠার পিছনে যার অবদান রেখেছে, তিনি একে নাজমুল করিম। তাকে বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয়। তার মাধ্যমে ড. পেরিবেসাইন এদেশে আসেন এবং চর্তুদিকে ঘুরে দেখেন। অবশেষে তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে বাংলাদেশ সমাজবিজ্ঞান পাঠের জন্য উপযুক্ত ক্ষেত্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউনেসকোর যৌথ উদ্যোগে ১৯৫৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বতন্ত্র বিভাগ হিসাবে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে ১৯৬৯ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। ফলে ১৯৭০ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে সমাজবিজ্ঞানের অধ্যয়ন শুরু হয়। বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কলেজে বিভাগটি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশেও এই বিভাগের বিকাশ অব্যাহত রয়েছে।

সমাজবিজ্ঞান থেকে পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করার সুযোগ রয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, সমাজসেবা অধিদপ্তরে। এছাড়াও রয়েছে অনেক এনজিওতে পেশাগতভাবে কাজ করার সুযোগ। তবে আন্তর্জাতিক, দেশি ও স্থানীয় এনজিওগুলোর বিভিন্ন বিভাগে চাকরির সুযোগ আছে অনেক। সমাজের জন্য দরকার হয় গবেষণা। আর সমাজ নিয়ে গবেষণা করে সমাজবিজ্ঞান । ফলে গবেষণা,উন্নয়নমূলক প্রোগ্রাম, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিভাগ, মানবসম্পদ উন্নয়নে কাজ করা যায়। এছাড়া সোশ্যাল গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অধীনে গবেষক, সহকারী গবেষক, মাঠ গবেষণা পর্যবেক্ষক, পর্যবেক্ষক, গবেষণা পদ্ধতি উন্নয়নকারী, তথ্য সংগ্রহকারী এবং গবেষণা প্রতিবেদক হিসেবেও চাকরি পাওয়া যায়। এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিসিএস ক্যাডারে যোগদান করা ছাড়াও দেশের ব্যাংক, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন প্রাইভেট ফার্ম, শিক্ষকতা, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষক হিসেবে এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় চাকুরি লাভ করে থাকে।

সমাজবিজ্ঞানে পড়ে বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ আছে অনেক। সমাজবিজ্ঞানে ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান প্রভৃতি দেশসহ অনেক উন্নত দেশে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রচুর। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছরই অনেক শিক্ষার্থী সামাজিক বিজ্ঞানে পড়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ অন্যান্য উন্নত দেশগুলোতে পড়াশোনার জন্য যাচ্ছে। সমাজবিজ্ঞানে পড়ালেখার জন্য উন্নত দেশগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর ছাত্রছাত্রীদের জন্য অনেক বৃত্তির সুযোগ দিয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রে ফুলব্রাইট বৃত্তি, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো ইরাসমাস মান্ডিস বৃত্তি, নরওয়েতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য কোটা বৃত্তি, যুক্তরাজ্যে কমনওয়েলথ বৃত্তি, অস্ট্রেলিয়ায় ইউএনএসডাব্লিউ বৃত্তি গুলো অন্যতম। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা নিজেদের গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে অনেক ছাত্রছাত্রীকে স্কলারশিপের ব্যবস্থা করে থাকে। তাই সমাজবিজ্ঞান সাবজেক্ট হিসেবে প্রথম পছন্দ হতে পারে।

প্রবা/জিকে

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা