× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বাংলাদেশে শিক্ষার খরচের ৭১ শতাংশ বহন করে পরিবার : ইউনেসকো

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২৩ ২০:১৫ পিএম

আপডেট : ০৩ জানুয়ারি ২০২৩ ২০:৩৪ পিএম

ফল পাওয়ার পর চট্টগ্রামে চলতি বছরের এসএসসির শিক্ষার্থীদের উল্লাস। ছবি : প্রবা

ফল পাওয়ার পর চট্টগ্রামে চলতি বছরের এসএসসির শিক্ষার্থীদের উল্লাস। ছবি : প্রবা

বাংলাদেশে ছেলেমেয়েদের শিক্ষা বাবদ ব্যয়ের ৭১ শতাংশই বহন করতে হয় পরিবারকে। আবার দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বেসরকারি খাতে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী বাংলাদেশেই। এসব শিক্ষার্থীদের এক-তৃতীয়াংশকেই ঋণ করে মেটাতে হয় পড়াশোনার খরচ। এ ছাড়া সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খরচের তুলনায় প্রায় নয়গুণ বেশি ফি ও খরচ হয় বেসরকারি কিন্ডারগার্টেনে। অন্যদিকে, এনজিও বা বেসরকারি স্কুলের খরচ সরকারির চেয়ে তিনগুণ বেশি।

জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থার (ইউনেসকো) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে ‘ইউনেসকোর গ্লোবাল অ্যাডুকেশন মনিটরিং রিপোর্ট ২০২২’ নামের এই গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

এতে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বেসরকারি খাতে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী বাংলাদেশে। আবার বাংলাদেশে মাধ্যমিকে ৯৪ শতাংশ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষায় সর্বোচ্চ বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শ্রীলঙ্কায় ৮০ শতাংশ, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাংলাদেশে ৫৫ শতাংশ। প্রাথমিকে সর্বোচ্চ ভারতে ৪৫ শতাংশ, বাংলাদেশে ২৪ শতাংশ। মাধ্যমিকে বাংলাদেশের বেসরকারি বিদ্যালয়ে সর্বাধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী ৯৪ শতাংশ, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভারতে ৫১ শতাংশ। উচ্চ শিক্ষায় সর্বোচ্চ ভারতে ৫৭ শতাংশ আর বাংলাদেশে এ হার ৩৬ শতাংশ। গড়ে বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে নির্ভরতা সবচেয়ে বেশি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে শিক্ষা ব্যয়ের ৫৭ শতাংশ বহন করে পরিবার। নেপালে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষায় পরিবারের ব্যয় ৬৩ শতাংশ এবং কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা-প্রশিক্ষণে ৭৫ শতাংশ, যেখানে সরকারি কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে এই ব্যয় হার আট শতাংশ। ভারতে শীর্ষ ২০ শতাংশ পরিবার নিচের ২০ শতাংশ পরিবারের তুলনায় সরকারি, বেসরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এবং অনুদানবিহীন সব রকম স্কুলে প্রায় চারগুণ বেশি ব্যয় করে। ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে এসব পরিবার সরকারি স্কুলের তুলনায় বেসরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এবং অনুদানবিহীন স্কুলে পাঁচগুণ বেশি ব্যয় করেছে।

শিক্ষার খরচ মেটাতে ঋণ করে দেশের এক-তৃতীয়াংশ পরিবার

গবেষণায় উঠে এসেছে, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রায় ১২ শতাংশ পরিবার সঞ্চয় করে এবং ছয় শতাংশ পরিবার স্কুলের ফি মেটাতে ঋণ করে। বাংলাদেশে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পরিবার ঋণ করে সন্তানদের বেসরকারি পলিটেকনিকে পড়াশোনার খরচ মেটায়। ভুটান, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় অ-রাষ্ট্রীয় বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাগ্রহণকারীদের স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার জন্য সরকারি শিক্ষার্থী ঋণ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে শিক্ষার্থীরা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি বৃদ্ধি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফির ওপর কর আরোপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিল। ফলে কিছু সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়েছিল।

ইউনেসকোর করা জরিপে দেখা গেছে, ভারতের ১ হাজার ৫০টি কম ফির বেসরকারি স্কুলের মধ্যে ১ হাজার স্কুল শুধুমাত্র ফির ওপর নির্ভর করে চলে। অন্যদিকে, আফগানিস্তান, ভারত এবং নেপালের শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলো ফির ওপর নির্ভরতা এবং সরকারি তহবিলের অভাবকে তাদের কর্মসূচির উন্নয়নে প্রধান প্রতিবন্ধকতা মনে করে। 

এক দশকে শিক্ষায় ব্যয় জিডিপির আড়াই শতাংশের কম 

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ায় শিক্ষায় প্রবেশের ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি হলেও রাষ্ট্রসমূহের শিক্ষায় বিনিয়োগ অপ্রতুল। একমাত্র ভুটান ছাড়া এ অঞ্চলের অন্য দেশগুলো কখনই শিক্ষাক্ষেত্রে মোট সরকারি ব্যয়ের ১৫ শতাংশ বা মোট দেশীয় উৎপাদনের (জিডিপি) চার শতাংশের কাছাকাছিও ব্যয় করেনি। ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এক দশকে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা শিক্ষা খাতে মোট জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশেরও কম ব্যয় করেছে। গুণগতমান এবং শিক্ষার প্রাসঙ্গিকতা তাই একটি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার দায়িত্বভার দুটি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ভাগ করা থাকায় শিক্ষার গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে বলেও উঠে এসেছে গবেষণা প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে,  দুটি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ভাগ করা থাকায় পাঠ্যক্রম, শিক্ষক, শিক্ষার গুণগত মান ও অন্যান্য মানদণ্ডগুলোর ক্ষেত্রে সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গিকে বাধাগ্রস্থ করছে।

প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিরেটাস অধ্যাপক ড. মঞ্জুর আহমেদ, ব্র্যাকের চেয়ারপারসন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ্র ও গণসাক্ষরতা অভিযানের প্রধান নির্বাহী রাশেদা কে চৌধুরীসহ অনেকে।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা