প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:১৬ পিএম
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:৪৯ পিএম
সোমবার বিকাল ৪টার দিকে ডিজিটাল লটারির উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ছবি : প্রবা
সুযোগের সমতার জন্য সরকারি মাধ্যমিকে ভর্তিতে ডিজিটাল লটারি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেছেন, ‘ভর্তি প্রক্রিয়ার জটিলতা দূর করতেই ডিজিটাল লটারি চালু করা হয়। আমাদের অনেক সমস্যা আছে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে। লটারি নিয়ে অনেকেই খুশি, যদিও কিছু অভিভাবক এতে অসন্তুষ্ট। কিন্তু এর মাধ্যমে ভর্তি কোচিং-বাণিজ্য, অবৈধ শিক্ষার্থী ভর্তি ও তদবির বন্ধ হয়েছে।’
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টার দিকে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সরকারি বিদ্যালয়ের ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তি কার্যক্রমে ভর্তির ডিজিটাল লটারি উদ্বোধন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বেসরকারি স্কুলে আমরা দেখছি আসন অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের আবেদন কম। তাই বলা যায়, সকল শিক্ষার্থীই ভর্তির সুযোগ পাবে। আগে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রচণ্ড মানসিক চাপে থাকত। এখন শিক্ষার্থীরা তা থেকে মুক্ত হয়েছে। নতুন শিক্ষা কার্যক্রম অনুযায়ীও শিক্ষার্থীরা চাপমুক্ত থেকে শিখবে। আমাদের লক্ষ্য সকল স্কুলই হবে সেরা স্কুল।’
লটারি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর নেহাল আহমেদ টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম. হাবিবুর রহমানসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও টেলিটকের কর্মকর্তারা।
এই লটারি ১০ ডিসেম্বর হওয়ার কথা থাকলেও তা পরিবর্তন করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। তবে বেসরকারিতে ভর্তির লটারি আগের ঘোষণা অনুযায়ী ১৩ ডিসেম্বর বেলা ৩টার দিকে অনুষ্ঠিত হবে।
স্কুলে ভর্তির নির্ধারিত ওয়েবসাইটে (https://gsa.teletalk.com.bd/) লটারির ফল দেখা যাবে।
এবারের লটারিতে আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য সরকারি বিদ্যালয়ে ১ লাখ ৭ হাজার ৮৯০টি শূন্য আসনের বিপরীতে আবেদন জমা পড়েছে ৬ লাখ ২৬ হাজার ৫৯টি। সেই হিসাবে প্রতি আসনে ভর্তি হতে আবেদন করেছে ৫ দশমিক ৮ জন শিক্ষার্থী। আর বেসরকারিতে ৯ লাখ ২৫ হাজার ৭৮০টি শূন্য পদের বিপরীতে আবেদন জমা পড়েছে মাত্র ২ লাখ ৬০ হাজার ৯৩৩টি। ফলে বেসরকারিতে আসন খালি থাকবে ৬ লাখ ৬৪ হাজার ৮৪৭টি।
এর আগে ২০২১ ও ২২ সালে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তি কার্যক্রম অনলাইন ও লটারির মাধ্যমে করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় সরকারি ও বেসরকারি (মহানগর, জেলা সদর ও উপজেলা সদর) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয় মাউশি।
সরকারি স্কুলে ৫৯ শতাংশ আসন কোটায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভর্তি সুযোগ পাবে মাত্র ৪১ শতাংশ আসনে। গত ৫ ডিসেম্বর সরকারি স্কুল ভর্তিতে নীতিমালা জারি করে প্রজ্ঞাপন দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
এতে দেখা যায়, এবার প্রথমবারের মতো ২ শতাংশ সিট বরাদ্দ রাখা হয়েছে শিক্ষার দপ্তর-সংস্থার কর্মীদের সন্তানদের জন্য। মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার কিংবা তাদের ছেলে বা মেয়ের পরিবারের সন্তানরা পাবে ৫ শতাংশ, ক্যাচমেন্ট এরিয়ায় (ঢাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে এবার এলাকা কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট থানা বা একটি নির্দিষ্ট এলাকাকে ‘ক্যাচমেন্ট এরিয়া’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে) বসবাসরত শিক্ষার্থীরা ৪০ শতাংশ, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু (প্রতিবন্ধী) শিক্ষার্থী ২ শতাংশ কোটা। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য সরকারি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণির মোট আসনের ১০ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। সব মিলিয়ে মোট আসনের শতকরা হিসাবে ৫৯ শতাংশ আসন বিভিন্ন কোটায় সংরক্ষিত।
আগামী সেশনের জন্য অনলাইনে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয় ১৬ নভেম্বর, যা চলে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত।