মেহরাব হোসেন, ববি
প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২৫ ০৯:২১ এএম
তীব্র বাস সংকটে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা। প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে মাত্র ২২টি বাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের বাইরে বসবাস করেন, ফলে তাদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলো। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় বাসের সংখ্যা অনেক কম হওয়ায় প্রতিদিন সকালে ও বিকালে বাসে গাদাগাদি করে যাতায়াত করতে হয়। এমনকি বাসে ঝুলে ঝুলে যাতায়াত করতে হয়, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুল সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত ২২টি বাসের মধ্যে ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব এবং বাকি ১০টি (৭টি দোতলা ও ৩টি একতলা) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) থেকে ইজারা নেওয়া। এই বাসগুলো নগরীর তিনটি প্রধান রুটে চলাচল করেÑ বরিশাল ক্লাব, নতুন বাজার ও নথুল্লাবাদ পর্যন্ত। এই তিন রুটেই প্রতিদিন ছাত্রছাত্রীদের বিশাল ভিড় দেখা যায়।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সংকটের কারণে বাধ্য হয়েই তাদের বাইরে থাকতে হয়। তাই ক্যাম্পাসে আসার জন্য বাসই তাদের প্রধান বাহন। পর্যাপ্ত বাস না থাকায় সকালে এবং ফেরার পথে শিক্ষার্থীদের চরম ভিড়ের মধ্যে যাতায়াত করতে হয়। অনেক শিক্ষার্থী বাসে উঠতে না পেরে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে বিভিন্ন যানবাহনে যেতে বাধ্য হন। যারা বাসে উঠতে পারেন, তাদের গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে যেতে হয়, যা প্রায়ই বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী ইশিতা রহমান বলেন, বাসের সংকট তো আছেই, তার সঙ্গে বাসগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। কিছুদিন আগে প্রবল বৃষ্টির সময় একটি বাসে ওয়াইপার কাজ না করায় চালকের পক্ষে সামনের রাস্তা দেখা কঠিন হয়ে পড়ে। তখন ভিসি গেটের কাছে একজন আপু অল্পের জন্য দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পান। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনও এই সংকট নিরসনে কোনো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেনি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী তাবাসসুম ছুটি বলেন, বাসের ভোগান্তি আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী, বিশেষ করে সকালে নতুন বাজার রুটের বাসে যাতায়াতের সময় প্রায় সব শিক্ষার্থীকে দাঁড়িয়ে যেতে হয়। ফেরার পথে শেষের দুটি বাসে জায়গা পাওয়া তো দূরের কথা, দাঁড়ানোর মতো জায়গাও থাকে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংকটের মধ্যে পরিবহন সংকট অন্যতম। আমি বিআরটিসির সঙ্গে কথা বলেছি, আরও একটি বাস দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বাসের জন্য এখনও কোনো বরাদ্দ নেই। সমস্যার সমাধানে আমরা চেষ্টা করছি।