রাজশাহী অফিস
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৫ ২২:১৩ পিএম
আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২৫ ২২:৪৩ পিএম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সন্ধ্যাকালীন কোর্সের বিরোধিতা করায় চারুকলা অনুষদের এক শিক্ষককে সাধারণ সভা চলাকালে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও হেনস্থার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর এবং একই অনুষদের মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুস সালাম।
ভুক্তভোগী শিক্ষক হলেনÑ চারুকলা অনুষদের চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুস সোবাহান। গত বুধবার চারুকলা অনুষদের অধিকর্তার কক্ষে অনুষদের ২৯তম সাধারণ সভা চলাকালেই এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে এ ঘটনার তদন্ত করে অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক।
অভিযোগে ভুক্তভোগী শিক্ষক উল্লেখ করেন, ‘২ জুলাই চারুকলা অনুষদের অধিকর্তার কক্ষে অনুষদের ২৯তম সাধারণ সভা চলাকালে সন্ধ্যাকালীন কোর্স চালুর বিষয়ে এজেন্ডা উপস্থাপিত হলে আমি মতামত প্রদান করি। প্রাথমিকভাবে আমার কাছে মনে হয়েছে, সান্ধ্য কোর্স চালু হলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের স্বকীয়তা নষ্ট হতে পারে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যেও এটি নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া এটা আমাদের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য এক আত্মঘাতী বিষয়। এ সময় আমি বলি, সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্সসহ ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট প্রোগ্রামের বিষয়গুলো বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় চালু হয়েছিল। ফলে অনুষদের অধিকর্তাকে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের স্বার্থের বাইরে গিয়ে এ সিদ্ধান্ত না নেওয়ার প্রস্তাব দিই। ফ্যাসিস্ট সরকারের বিষয়টি বলায় তাৎক্ষণিক মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের আওয়ামীপন্থি শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোস্তফা শরীফ আনোয়ার আমার সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলায় তার সঙ্গে আমার উচ্চবাচ্য হয়।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘সে সময় মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুস সালাম আমার মতামতকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে আমাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘একে বের করে দেওয়া হোক।’ যা সম্পূর্ণ তার এখতিয়ারের বাইরে। এ সময় আমি দু-পা সামনে এগিয়ে গিয়ে বলি, ‘তুমি আমাকে বের করে দিতে বলার কে?’ সে মুহূর্তে আব্দুস সালাম উত্তেজিত হয়ে আমার কোমর জাপটে ধরে ওপরে তোলে এবং বলপ্রয়োগ করে চেয়ারে বসিয়ে দেয়। একজন সহকর্মীর দ্বারা মিটিং চলাকালে সব শিক্ষকের সামনে এমন লাঞ্ছনার ঘটনায় আমি হতবাক হয়ে যাই। একজন শিক্ষকের দ্বারা এমন শারীরিক লাঞ্ছনার ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধির চূড়ান্ত লঙ্ঘন।’
অভিযুক্ত শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর আব্দুস সালাম বলেন, ‘গতকাল অনুষদের মিটিংয়ের মাঝখানে এসে তিনি চেঁচামেচি শুরু করেন। তিনি আগেও এমন করেছেন। এটা তার মানসিক সমস্যা। তিনি হঠাৎ চেঁচামেচি করে চেয়ার থেকে উঠে গেলে তাকে আমি চেয়ারে বসিয়ে দিই।’