× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বিএড সনদে স্কেল বৈষম্য, মাউশি ভবনের সামনে শিক্ষকদের বিক্ষো

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২৫ ১৩:৩৯ পিএম

বিএড সনদে স্কেল বৈষম্য, মাউশি ভবনের সামনে শিক্ষকদের বিক্ষো

বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বিএড সনদপ্রাপ্তদের উচ্চতর বেতন স্কেল না দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন এমপিওভুক্ত স্কুলের শিক্ষকরা। 

মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাজধানীর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ভবনের ১ নম্বর গেটের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, এটি একটি বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত। অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রি নিয়ে অনেকে স্কেল পাচ্ছেন, অথচ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান থেকেও ডিগ্রি নিয়েও অনেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

তারা আরও বলেন, এমপিও নীতিমালায় স্পষ্টভাবে বলা আছে, বিএড ডিগ্রি অর্জনের পর শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড (১৬ হাজার টাকা) দেওয়া হবে। কিন্তু বাস্তবে তা কার্যকর হচ্ছে না। তিন বছর চাকরি না করলে স্কুল থেকে বিএড কোর্সের জন্য ছুটি মেলে না। ফলে এক বছরের কোর্স শেষ করতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। অনেক শিক্ষক ২০২৩ সালে ভর্তি হয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে ফল পান এবং চলতি বছরের শুরুতে সার্টিফিকেট হাতে পেয়েছেন। এরপর স্কেল পাওয়ার আবেদন করলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠির কারণে সেগুলো বাতিল হয়ে যায়।

তারা দাবি করে বলেন, ‘শিক্ষকদের ন্যায্য মর্যাদা দিতে হবে। এই অবিচার চলতে পারে না। দ্রুত সমাধান না হলে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষিকা রাবেয়া আক্তার বলেন, ‘বিএড ডিগ্রি না থাকায় আমরা এখনো ১১তম গ্রেডে (১২ হাজার ৫০০ টাকা) বেতন পাচ্ছি। অথচ আমরা পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে ৪০০–৫০০ কিলোমিটার দূরের স্কুলে গিয়ে জীবন চালাচ্ছি। এই বেতনে বর্তমান বাজারে টিকে থাকা অসম্ভব।’

তিনি আরও বলেন, এমপিও নীতিমালায় বলা আছে, বিএড ডিগ্রি অর্জনের পর শিক্ষকেরা ১০ম গ্রেড পাবেন। কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না। স্কুল থেকে তিন বছরের আগে ছুটি পাওয়া যায় না, কোর্স এক বছরের হলেও সার্টিফিকেট হাতে পেতে দুই বছরের বেশি লেগে যায়। ফলে বিএড করতে বাস্তবে পাঁচ বছর চলে যায়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া আরেক শিক্ষক মেহেদী হাসান বলেন, ‘একজন শিক্ষক হয়ে দিনের পর দিন ক্লাস নিচ্ছি, অথচ শুধু অনুমোদনের ফাঁদে পড়ে আমরা বেতন বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। আমাদের অপরাধটা কী? আমরা তো কোনো ভুয়া সনদ নেইনি।’

তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজে ভর্তি হয়েছি, ক্লাস করেছি, পরীক্ষা দিয়েছি, সরকারি ফি পরিশোধ করেছি সব নিয়ম মেনে ডিগ্রি পেয়েছি। এখন শুনছি, সেই ডিগ্রির কোনো দাম নেই! তাহলে সেই সময়, কষ্ট, অর্থ সবই কি ব্যর্থ গেল?

অপর শিক্ষক সাদ্দাম হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘যেখানে একজন সহপাঠী পাশের কলেজ থেকে বিএড করে স্কেল পাচ্ছেন, আমি একই সময়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ থেকে করে বঞ্চিত হচ্ছি। এটা কোনোভাবেই ন্যায়সঙ্গত নয়। একই কোর্স, একই সিলেবাস, কিন্তু স্বীকৃতি আলাদা—এটা কি বৈষম্য নয়? আজ শিক্ষক সমাজকে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে দাবি জানাতে হচ্ছে, এটা দুঃখজনক। শিক্ষকের মর্যাদা শুধু বক্তৃতায় থাকলে হবে না—বাস্তবেও তার প্রতিফলন থাকতে হবে। এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।’

উল্লেখ্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ২১ জানুয়ারি এক চিঠিতে কনটেম্পট পিটিশন নং ১৫৩/২০১৪ অনুযায়ী ২৩টি নির্দিষ্ট বেসরকারি টিটি কলেজ থেকে অর্জিত বিএড ডিগ্রিকে বৈধ বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এর বাইরে অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া সনদের ভিত্তিতে স্কেল প্রদান করলে তা সরকারি অর্থের অপব্যবহার হিসেবে বিবেচিত হবে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

সরকার অনুমোদিত ২৩টি বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের মধ্যে রয়েছে - মহানগর টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (ঢাকা), হাজি ওয়াজেদ আলী টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (সাতক্ষীরা), আমিরুল ইসলাম কাগজী টিটি কলেজ (খুলনা), হাজীগঞ্জ আইডিয়াল কলেজ অব এডুকেশন (চাঁদপুর), পিরোজপুর টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, কলেজ অব এডুকেশন (বরিশাল), মুন্সী মেহেরউল্লা টিটি কলেজ (যশোর), জয়পুরহাট বিএড কলেজ, মঠবাড়িয়া টিটি কলেজ, বগুড়া বিএড কলেজ, দক্ষিণ বঙ্গ টিটি কলেজ (পটুয়াখালী), কক্সবাজার টিটি কলেজ, পরশ পাথর টিটি কলেজ (চট্টগ্রাম), ড. মিয়া আব্বাস উদ্দীন টিটি কলেজ (বাগেরহাট), শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ (যশোর), উপশহর টিটি কলেজ (যশোর), মাগুরা টিটি কলেজ (মাগুরা), খান, সেকান্দার, সিটি, ন্যাশনাল টিটি কলেজ, কলেজ অব এডুকেশন (নর্থ আমানতগঞ্জ) এবং সিটি টিটি কলেজ (চট্টগ্রাম)।

তবে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাদের অধীভুক্ত সব বেসরকারি বিএড প্রতিষ্ঠানের সনদের মান সমান বলে জানিয়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মারুফ কামাল খান

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা