পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন
রাজশাহী অফিস ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৫ ২০:৪৭ পিএম
আপডেট : ২৮ মে ২০২৫ ২১:৫৯ পিএম
মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির রায়কে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাস।
রায়ের প্রতিবাদে মিছিল করায় মঙ্গলবার রাতেই বাম দলগুলোকে নিয়ে গঠিত গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শাহবাগবিরোধী ঐক্যের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন। গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের দাবিÑ শিবির তাদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। এদিকে শাহবাগবিরোধী ঐক্যের শিক্ষার্থীদের দাবিÑ তাদের এই প্লাটফর্মে শুধু শিবির নয় আরও অনেক ছাত্র সংগঠন রয়েছে।
এদিকে আগের রাতে সংঘর্ষের পর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলে বুধবার (২৮ মে) পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেছে শাহবাগবিরোধী ঐক্য এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। অন্যদিকে শাহবাগবিরোধী ঐক্যের পক্ষ নিয়ে রাবি শাখা ইসলামী ছাত্রশিবি গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে হামলার নিন্দা জানিয়েছে। আর গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের পক্ষ নিয়ে মঙ্গলবার রাতেই মিছিল করেছে রাবি শাখা ছাত্রদল।
বেলা ১১টায় রাবির পরিবহন মার্কেটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শাহবাগবিরোধী ঐক্যের সংগঠক ও রাবি শাখা ছাত্র মিশনের সভাপতি জিএ সাব্বির বলেন, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর পরিবহন চত্বরে সবার উদ্দেশে বক্তব্য দিচ্ছিলেন ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যে’র বিভিন্ন সংগঠক ও নেতারা। ঠিক তখনই পেছন থেকে বাম সংগঠনের গুটি কয়েকজন মশালধারী আমাদের শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার, জামায়াত-শিবির’ বলে বুলিং করে। তারা স্লোগান দিয়ে বারবার মশাল নিয়ে আমাদের দিকে তেড়ে আসে। ইচ্ছে করেই একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে ভিকটিম কার্ড খেলার পুরোনো চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে আমাদেরকে লক্ষ করে ইট নিক্ষেপ করে। এরপর আমাদের গায়ে জ্বলন্ত মশাল পর্যন্ত ছুড়ে মারে লালবাহিনীর সন্ত্রাসীরা। এতে আমাদের কয়েকজন ভাই আহত হয়। এ ঘটনায় রাবি ছাত্রদলও লালবাহিনীর ফাঁদে পা দিয়ে বিবৃতি ও মিছিল করেছে, যা আমাদের জন্য খুবই লজ্জার।
এদিকে দুপুর ১২টায় একই স্থানে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের দায়ী করে হামলাকারীদের বিচার এবং তাদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র গণমঞ্চের সভাপতি নাসিম সরকার বলেন, চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী এটিএম আজহারুল ইসলামকে খালাস দেওয়ার প্রতিবাদে মশাল মিছিল শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ছাত্র শিবিরের ২০০ জন নেতাকর্মী আমাদের দিকে তেড়ে আসে এবং অতর্কিত ইটপাটকেল, চেয়ার ও লাঠি ছুড়ে মারতে শুরু করে। মিছিলটি বুদ্ধিজীবী চত্বর সংলগ্ন প্যারিস রোডে পৌঁছলে আরও দুই দফা হামলা করা হয়। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন রক্তাক্ত হন।
নাসিম সরকার অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বে অবহেলার কারণে বারবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রক্টরিয়াল বডি তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ নিলে আমাদের সহযোদ্ধারা এভাবে রক্তাক্ত হতো না। আমরা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। প্রশাসন অবিলম্বে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আমরা তাদের অপসারণ চাইতে বাধ্য হব।
এদিকে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন রাবির ছাত্র উপদেষ্টা ড. মো. আমিরুল ইসলাম।