আবদুল্লাহ আল মারুফ, কুমিল্লা (দক্ষিণ)
প্রকাশ : ২১ মে ২০২৫ ১৯:২১ পিএম
আপডেট : ২১ মে ২০২৫ ১৯:২৯ পিএম
কুমিল্লার একমাত্র হ্যানিম্যান হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজ করুণ দশায় পড়েছে। ৪৭ বছর ধরে কলেজটি নানা দুর্দশা মোকাবিলা করে টিকে আছে।
কুমিল্লা সরকারি কলেজে অস্থায়ীভাবে এর যাত্রা শুরু হয়। প্রায় এক বছর পর কুমিল্লা নগরীর পুরাতন চৌধুরী পাড়া এলাকার কুমিল্লা হাইস্কুলে সরিয়ে আনা হয়। পরবর্তী সময়ে সরকারের অনুমতি নিয়ে কুমিল্লা জজকোর্ট সড়কের পুরাতন চৌধুরী পাড়া এলাকায় লিজের জায়গায় কলেজটির শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।
এর শিক্ষার্থীর সংখ্যা পাঁচশতাধিক। স্থায়ী শিক্ষক কর্মকর্তা মিলিয়ে ১৫ জন কর্মরত। টিনের চালা ঘরের ৫টি ক্লাস রুমে পাঠদান চলছে।
৪২ শতক জায়গা নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাস। টিনের ঘর ছাড়া একটিও বহুতল ভবন নেই। শিক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে ক্লাস করেন। কোনো ক্লাসরুমে ফ্যান আছে, কোনোটায় নেই।
বহুতল ভবনের অভাব কলেজটি করুণা দশা চোখে পড়ে। পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় হোমিওপ্যাথ শিক্ষায় আগ্রহী নন অনেকে। তাই দরকার হয়ে পড়েছে কলেজটির অবকাঠামোর উন্নয়ন।
কলেজ অধ্যক্ষ ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে কলেজে ২০০-২৫০ শিক্ষার্থী ছিল। ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয় প্রতিষ্ঠার চার বছর পর ১৯৮২ সালে। এরপর এটি ভালো অবস্থায় আসে ১৯৯৫ সালে নতুন জায়গায় স্থানান্তরের পর। তখন থেকে প্রতি বছর ৩০০ শিক্ষার্থী ভর্তি হতে শুরু করে। এই সংখ্যা মাঝেমধ্যে বেড়ে গেছে। বর্তমানে পাঁচ হাজার ১৬০ শিক্ষার্থী নিয়ে চলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি।
অধ্যক্ষ বলেন, বহুতল ভবন না থাকায় কলেজটি পিছিয়ে পড়েছে। কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাদারিপুর সদর উপজেলার বাহাদুপুর গ্রামের শুভ্রত কুমার বাগ্চী বলেন, ‘হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় আধুনিকতার মিশ্রণ হয়েছে। এটি এখন নতুনত্ব পেয়েছে। কিন্তু আমাদের কলেজের কোনো উন্নয়ন হয়নি। এখানে কোনো বহুতল ভবন নেই। যে কারণে ক্লাসরুম সংকট। নেই কোনো গবেষণাগার। না আছে কোনো পরীক্ষাগার। তাই আমরা পিছিয়ে পড়েছি।’
কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী লাকসামের নরপাটি গ্রামের আমেনা আক্তার রুমি বলেন, ‘আমাদের মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম নেই। কোনো পাঠাগার নেই। কমনরুম নেই। তাই ছাত্রীরা মাঝেমধ্যে ভোগান্তিতে পড়ে। এ ছাড়া কোনো ব্রেস্ট ফিডিং সেন্টার না থাকায় অনেকে শিশুদের নিয়ে বিপাকে পড়েন। স্থান স্বল্পতার কারণে দাবি করেও লাভ নেই। কলেজ কর্তৃপক্ষ কিছু করতে পারবে না।
কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সামর্থ্য থাকলেও লিজের জায়গায় বহুতল ভবন করা যাচ্ছে না। কলেজের নিজস্ব জায়গা যতদিন না হবে, ততদিন বহুতল ভবন করা যাবে না। ভবন না করতে পারার বিষয়ে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়ছার বলেন, ‘হ্যানিম্যান হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজের সমস্যার বিষয়টি আমরা জানি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারের জায়গা লিজ নিয়ে গড়ে উঠেছে। তাই বহুতল ভবন করা যাচ্ছে না। তবে তাদের ভূমি অধিগ্রহণ করে বহুতল ভবন করার সুযোগ আছে।