খোকন বিকাশ ত্রিপুরা জ্যাক, খাগড়াছড়ি
প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৫ ১৪:০৩ পিএম
আপডেট : ০৪ মে ২০২৫ ১৪:০৫ পিএম
খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়ির উন্নয়নবঞ্চিত ডাইনে বানরকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়ি উপজেলার ২ নম্বর দুল্যাতলী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ডাইনে বানরকাটা এলাকায় ডাইনে বানরকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি যেন পরিত্যক্ত ভবন। টিনশেড আর বেড়ার বিদ্যালয়টির কাঠের খুঁটিগুলোতে ঘুন ধরেছে। ভবনের দরজা-জানালা, চেয়ার-টেবিল ও বেঞ্চগুলোও ভাঙাচুরা। ঝড়-বৃষ্টিতে শ্রেণিকক্ষে আসা পানির তোড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা থাকে আতঙ্কে। সরকারি বিদ্যালয় হলেও উন্নয়নবঞ্চিত থাকায় প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য হারে শিক্ষার্থী কমছে। স্থায়ী বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের দাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর।
খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়ির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ডাইনে বানরকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯০ সালে স্থাপিত ডাইনে বানরকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ভবনটি বাঁশের বেড়া আর টিন দিয়ে তৈরি হয়। কিন্তু কয়েক বছর ধরে বিদ্যালয়টিতে দরজা-জানালা না থাকায় বৃষ্টির দিনে টিনের চাল দিয়ে শ্রেণিকক্ষে পানি পড়ে। রুমের ভেতরের মেঝেতে পা রাখার অবস্থা নেই। শিক্ষকদের একটি অফিস কক্ষও জরাজীর্ণ। শ্রেণিকক্ষে টিনশেডেটি উঁচুনিচু জোড়াতালিতে ভরা। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে এখানেই লেখাপড়া করছে ৭৬ জন কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থী। শ্রেণিকক্ষগুলোতে নেই বৈদ্যুতিক সুবিধা। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের চেয়ার ও শিক্ষার্থীদের বেঞ্চগুলোর জয়েন্ট খুলে গেছে। বিগত বছরগুলোতে বিদ্যালয়টিতে শতাধিক শিক্ষার্থী থাকলেও ২০২৫ সালে নেমে এসেছে ৭৬ জনে। বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ চারজন শিক্ষক এবং একটি পদ শূন্য রয়েছে।
কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, বিদ্যালয়ের সাইনবোর্ডই নেই, কোনো ভবন নেই। স্থায়ী ভবন না থাকায় অনেক কষ্টে আমাদের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করছে। বিদ্যালয়ের একটি ভবন খুবই প্রয়োজন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তরুন কান্তি চাকমা জানান, প্ৰায় ১০ বছর ধরে বিদ্যালয়টি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। সরকারি সহযোগিতার জন্য আবেদন করেও লাভ হচ্ছে না। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় টিনশেডের তিনটি কক্ষে ক্লাস করানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এমন জরাজীর্ণ বিদ্যালয় খাগড়াছড়ি জেলায় আর আছে কি না আমার জানা নেই।
দুল্যাতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ত্রিলন চাকমা বলেন, ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সরকারি স্কুলটি অনেক বছর ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। এমনিতেই ভাঙাচুরা অবস্থা, এটি যেকোনো মূহূর্তে ভেঙে যেতে পারে।
লক্ষীছড়ি উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার লিটন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, স্কুলটি পরিদর্শন করলাম। খুবই ভঙ্গুর অবস্থা, যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। বর্ষা সময় বৃষ্টির পানি পড়ে। সামনে বর্ষায় এই স্কুলের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। শিক্ষকদের কাছ থেকে আবেদন নিয়েই আমরা উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রেরণ করব। এটা যেহেতু অতিদুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকা। চেষ্টা করব আমাদের উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে হোক বা অন্যকোনো মাধ্যমে কিংবা সরকারের অন্যকোনো প্রকল্পের মাধ্যমে দ্রুত পাহাড়ি ডিজাইনে স্কুল নির্মাণের জন্য কাজ করার।