বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:৫২ এএম
আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:৫৬ এএম
প্রবা ফটো
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদে পহেলা বৈশাখে আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য বানানো মূল মোটিফ ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’ দুর্বৃত্তরা পুড়িয়ে ফেললেও সেটি নতুন করে নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান।
শনিবার (১২ এপ্রিল) রাতে চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা কর্মযজ্ঞের অগ্রগতি পরিদর্শনে এসে তিনি এ কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, ‘আমরা একটি উদ্যোগ নিয়েছিলাম, সেখানে বাধা এসেছে। এ ধরনের কাজে কিছু বাধা আসেই, ষড়যন্ত্র থাকবেই। এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে আমরা এগিয়ে যাব। এতে সবার সহযোগিতা কামনা করছি। আমরা এই মুহূর্তে একটি জাতীয় দায়িত্ব পালন করছি। সবাইকে পাশে থাকার আহ্বান জানাই।’
নতুন করে ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ফের মোটিফটি তৈরির জন্য সরঞ্জাম আনা হয়েছে। শিল্পীরা যত দ্রুত সম্ভব এই প্রতিকৃতি বানানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। ককশীট দিয়ে মোটিফটি দ্রুত সময়ের মধ্যে বানানো যায় কি-না সেটা নিয়ে কাজ করছেন তারা।’
তবে, এত স্বল্প সময়ে মূল আকৃতির মতো প্রতিকৃতি তৈরি করা সম্ভব কি না—এ নিয়ে সংশয়ও রয়েছে। এ নিয়ে ঢাবি প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ বলেন, ‘১ মাস ধরে বানানো একটা প্রতিকৃতি তো এক দিনে বানানো সম্ভব না। দেখা যাক, শিল্পীরা কি করেন। তারা অনেক ভেবে, চিন্তা করে কি করেন সেটা পরে দেখা যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা আমরা শিল্পীদের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। তারা দফায় দফায় বসছেন, পরিকল্পনা করছেন। তারা ভালো জানেন কি করবেন।’
এর আগে রাত সাড়ে ৯টায় কাজের অগ্রগতি দেখতে চারুকলা পরিদর্শন করেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলেন, ‘এই আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে আমি স্যালুট জানাই। তারা গত ১ মাস ধরে তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি নাশকতার মাধ্যমে পুড়িয়ে দিয়ে শিল্পীদের স্পিরিট দমানোর চেষ্টা করলেও আমি এসে দেখছি তাদের স্পিরিট দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আশা করব, দেশবাসী দারুণ একটি শোভাযাত্রা করবে। দেশবাসীকে আহ্বান জানাই শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য।’
শনিবার ভোরে ঢাবি চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে মূল মোটিফ ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’ দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে পুরোপুরি পুড়ে যায়। আগুনে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরেকটি মোটিফ ‘শান্তির পায়রা’।
সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, মুখে কালো মাস্ক পরা একজনকে আগুন দিতে দেখা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ জানান, ওই ব্যক্তি কালো টি-শার্ট, বাদামি প্যান্ট ও কালো স্যান্ডেল পরেছিলেন। চারুকলার মাঝখানের গেট টপকে ওই ব্যক্তি ভোর ৪টা ৪৪ মিনিটের ভেতরে ঢোকেন। একই পথে তিনি ৪টা ৪৬ মিনিটে পালিয়ে যান। তার নাম-পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
এ ঘটনা তদন্ত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। শাহবাগ থানায় জিডিও করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।