বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৫ ১৪:২১ পিএম
আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২৫ ১৪:৩৭ পিএম
বিক্ষোভের একপর্যায়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। প্রবা ফটো
সারা দেশে একের পর এক ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবিতে মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। পরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা।
রবিবার (৯ মার্চ) রাত ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক-জব্বার হল চত্বর থেকে একটি মিছিল বের হয়। একে একে বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিলে এসে যোগ দেয়।
এরপর মিছিলটি মেয়েদের হল এলাকাসহ ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে অবস্থান নেয়। তারা প্রায় ৩০মিনিটের মতো সময় রাস্তা অবরোধ করে রাখে। এতে সড়কের উভয় লেনে যান চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
মিছিলে শিক্ষার্থীদের ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘ধর্ষকের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘ধর্ষকদের গদিতে, আগুন জ্বালো একসঙ্গে’, ‘ধর্ষকদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘আমার বোন ধর্ষিতা কেন, প্রশাসন জবাই চাই’- এসব স্লোগান দিতে শোনা যায়।
অবরোধকালে শিক্ষার্থীরা জানান, সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। দেশের মানুষ অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাইদ ফরিদ বলেন, আজ বাংলাদেশ অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। আমাদের মা-বোনদের কোনো নিরাপত্তা নাই। কখন কার উপর জুলুম হয় আমরা জানি না। এ সরকার দেশের মানুষকে নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। দেশে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই বেড়েই চলেছে। অন্যদিকে প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। আমরা স্পষ্টভাবে প্রশাসনকে বলে দিতে চাই, ধর্ষকদের এমন শাস্তি দিতে হবে যাতে করে পরবর্তীতে কেউ আর ধর্ষণ করার সাহস না দেখায়।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, সারা দেশে ধর্ষণের পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। ধর্ষকরা এখন শিশু বাচ্চাদেরও ছাড় দিচ্ছে না। এমনকি আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মতো দিনেও ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এটা আমাদের জন্য বেদনাদায়ক। দেশে একের পর এক ধর্ষণ হচ্ছে, কিন্তু প্রশাসন ধর্ষকদের শাস্তির আওতায় আনতে পারছে না। এজন্য এ অপরাধ বেড়েই চলেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিচ্ছি। এর মধ্যে ধর্ষকদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা করা হবে।
৬ মার্চ মাগুরায় এবং ৮ মার্চ গাজীপুরে পৃথকভাবে শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়েছে।