খুলনা অফিস
প্রকাশ : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৪৬ পিএম
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য ড. শরিফুল ইসলামের অপসারণের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চিঠি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এ চিঠি পাঠানো হয়। এতে তারা দ্রুত নতুন উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানান।
চিঠিতে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, ৯৩তম জরুরি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কুয়েট ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ। অথচ ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ছাত্রদলের সদস্যরা ফর্ম বিতরণ শুরু করলে শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ মিছিলের ডাক দেন। কিন্তু হঠাৎ করে ছাত্রদলের কর্মীরা মিছিলের ওপর হামলা চালিয়ে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেয়, যার ফলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সহায়তায় ছাত্রদল ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী হামলা চালায়, যা চার ঘণ্টা ধরে চলতে থাকে। এই ন্যক্কারজনক হামলায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন, অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারেনি।
চিঠিতে শিক্ষার্থীরা আরও জানান, ভিসি ও প্রো-ভিসির পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি উত্থাপন করি। আল্টিমেটাম দেওয়ার পরও আমাদের দাবি পূরণ না হওয়ায় ভিসির অপসারণ দাবি করা হচ্ছে।
এ ছাড়াও চিঠিতে ভিসির অপসারণে শিক্ষার্থীরা যেসব কারণের কথা উল্লেখ করেছেন সেগুলো হলো-
১. বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক অনুপ্রবেশ রোধে প্রশাসনের ব্যর্থতা।
২. শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদল ও স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মীদের হামলার সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারা।
৩. দেড়শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার পরও দায় স্বীকার করতে প্রশাসনের অনীহা।
৪. হামলার যথেষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া।
৫. শিক্ষার্থীদের দেওয়া ৬ দফা দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি উপেক্ষা করা।
শিক্ষার্থীরা দ্রুত নতুন ভিসি ও প্রো-ভিসি নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন, যাতে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং একাডেমিক কার্যক্রম সচল রাখতে পারে।
এদিকে কুয়েট শিক্ষক সমিতি এক বিবৃতিতে ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতার জন্য ‘কুচক্রী মহলকে’ দায়ী করেছে। শিক্ষকদের ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ব্যর্থতার দায়ে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ক্যাম্পাসে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল, কিন্তু তা সময়মতো বাস্তবায়ন করা হয়নি। একই সঙ্গে শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহ্বান জানিয়েছে।