× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কৃষিতে নতুন সম্ভাবনা বাউ মিষ্টি আলু-৫

মো. আমানউল্লাহ, বাকৃবি

প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:১৯ পিএম

কৃষিতে নতুন সম্ভাবনা বাউ মিষ্টি আলু-৫

বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান খাদ্য ফসল মিষ্টি আলু। পুষ্টিগুণে ভরপুর এ ফসল ভাতের বিকল্প হিসেবে শর্করার চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রায় ২৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর চাষ হয়। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি এবং বিভিন্ন খনিজ পদার্থ থাকায় এটি পুষ্টির অন্যতম উৎস।

দেশে প্রচলিত মিষ্টি আলুর জাতের উৎপাদন ব্যয় বেশি এবং বাজারে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার কারণে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন কমে যাচ্ছিল। তবে বাংলাদেশের মিষ্টি আলুর চাষে নতুন এক সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল মিষ্টি আলুর নতুন জাত ‘বাউ মিষ্টি আলু-৫’। 

গবেষক দলের মতে, এই জাতের মিষ্টি আলু স্থানীয় জাতের তুলনায় তিন গুণ বেশি ফলন দেয়। প্রতিটি গাছে এক থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত আলু ধরে। মাত্র ৯০-১০০ দিনের মধ্যেই ফলন পাওয়া যায়। প্রতিটি গাছ ১০০ দিনের বেশি বয়সে সর্বোচ্চ ফলন দেয়।

ইতোমধ্যে ময়মনসিংহ, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, টাঙ্গাইল ও খুলনায় বাউ মিষ্টি আলু-৫-এর চারা সরবরাহ করা হয়েছে। কৃষকদের মতে, নতুন জাতের মিষ্টি আলু তাদের উৎপাদনশীলতা ও লাভজনক কৃষির সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলেছে।

ময়মনসিংহ সদরের কৃষক হাসান বলেন, এই জাতের আলু চাষ করে গড়ে আমরা প্রতি ১০ বর্গমিটারে ৩০ কেজি পর্যন্ত ফলন পেয়েছি। অন্যান্য স্থানীয় জাতের প্রতি গাছে ৭০০-৭৫০ গ্রাম আলু ধরলেও এই জাতের আলুতে ১২০০-১৫০০ গ্রাম পর্যন্ত ফলন পেয়েছি।

আলু চাষকারী আরেক কৃষক বলেন, আগে আমরা অনেক জমিতে আলু চাষ করতাম তবে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি ও বাজারে দাম কম পাওয়ায় চাষ করা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। বর্তমানে আবার এই নতুন জাতের আলু চাষ শুরু করেছি একই উৎপাদন খরচে এর ফলন বেশি হওয়া আশা করছি লাভবান হতে পারব।

ফুলপুরের কৃষক মনু মিয়া বলেন, ফুলপুরে প্রথমবার নতুন জাতের মিষ্টি আলু চাষে সফলতা পেয়েছি। প্রতিটি গাছে ২০০-৩০০ গ্রাম ওজনের ৬-৭টি আলু পেয়েছি। মিষ্টি আলুর জাত উদ্ভাবন নিয়ে গবেষণা দলের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মুন মোদক বলেন, ক্রিম, বেগুনি ও কমলা এই তিনটি রঙে আলুগুলো জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কমলা রঙের আলু গাজরের বিকল্প হিসেবে সালাদ হিসেবে খাওয়া যায়। বেগুনি রঙের গোল পুড়িয়ে খেলে দারুণ স্বাদ পাওয়া যায়, বিশেষ করে পোড়ানোর পর এতে গ্লুকোজ ও সুগারের পরিমাণ বেড়ে যায়। সাধারণ ক্রিম রঙের আলুগুলো সবজি হিসেবে রান্না করা যায়, আবার পুড়িয়েও খাওয়া যায়।

গবেষক দলের নেতৃত্বে থাকা অধ্যাপক এ বি এম আরিফ হাসান খান বলেন, বাউ মিষ্টি আলু-৫ একটি উচ্চফলনশীল জাত। এটি সাধারণ আলুর চেয়ে তিনগুণ বেশি ফলনশীল, যার প্রতিটি গাছে এক থেকে দেড় কেজি আলু ধরে। চারা রোপণের ৯০ দিনের মধ্যেই ফলন পাওয়া যায়। সাধারণ আলু প্রতি হেক্টরে ১০ দশমিক ২৫ টন ফলন দিলেও বাউ মিষ্টি আলু দেয় ৩০ টনেরও বেশি।

তিনি বলেন, বাউ মিষ্টি আলু-৫ কম-বেশি প্রায় সারা বছরই চাষ করা যায়। তবে রবি মৌসুমে (১৬ অক্টোবর থেকে ১৫ মার্চ) এর ফলন ভালো হয়। মিষ্টি আলু আমিষ, জিংক, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম, ভিটামিন ‘ই’, ভিটামিন ‘কে’ ও পটাশিয়ামের জোগান দিতে সক্ষম। উপযুক্ত ও অনুকূল পরিবেশে বাউ মিষ্টি আলু-৫ এর উৎপাদন প্রতি হেক্টরে সর্বোচ্চ ৪০ টন হওয়া সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, তবে রোগ সংক্রমণ, ইঁদুরের উৎপাতসহ কিছু প্রতিকূলতা থেকেই যায়। এমন অবস্থায় সর্বোচ্চ উৎপাদন হেক্টরপ্রতি প্রায় ৩৩ টন পাওয়া গেছে। দেশে প্রচলিত মিষ্টি আলুর জাতীয় গড় উৎপাদন ১০ টনের মতো। সে হিসাবে এই আলুর উৎপাদন তিনগুণের বেশি। এই জাতের চারা রোপণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো সময় হলো নভেম্বরের শেষের সময়টা। মার্চের শেষের দিকে এই মিষ্টি আলু উত্তোলন করলে ফলন সবচেয়ে ভালো পাওয়া যায়।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা