বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:২৮ পিএম
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:৩৯ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর পোষ্য কোটা সম্পূর্ণরূপে বাতিলের দাবিতে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেছে শিক্ষার্থরা।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টায় বটতলা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা।
অবরোধকালে তাদের ‘সংস্কার না বাতিল, বাতিল বাতিল’, ‘জনে জনে খবর দে, পোষ্য কোটার কবর দে’ ,‘হলে হলে খবর দে, পোষ্য কোটার কবর দে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’ ‘এসো ভাই - এসো বোন, গড়ে তুলি আন্দোলন’ স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এর আগে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আগামীকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। তারা কোটায় ভর্তির জন্য আরোপিত সব নতুন শর্ত বাতিল এবং পূর্ববর্তী নীতিমালা পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
এ সময় ইতিহাস বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নিবিড় ভূইয়া বলেন, আমরা জাবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী কারোরই পোষ্য কোটার কোন যৌক্তিকতা নেই। অজপাড়াগাঁয়ের একজন কৃষকের সন্তান যদি মেধার পড়াশোনা করতে পারে, তাহলে একজন শিক্ষার্থী যে জাহাঙ্গীরনগরের ছোট থেকে বড় হয়েছে, ভালো স্কুল কলেজে পড়াশোনা করেছে তার কোনো ধরনের প্রিভিলেজ লাগবে বলে আমরা বিশ্বাস করি না। আমরা বিশ্বাস করি কোটা একটি প্রিভিলেজ, এটি কোন অধিকার না। এই প্রিভিলেজটা ততক্ষণ পর্যন্ত দেয়া হবে যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের দরকার। কিন্তু এটা কোনোভাবেই দরকার না। আজ আমরা এই পোষ্য কোটা চিরতরে বাতিল করার জন্য আন্দোলনে নেমেছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মেজবাহুল হক আপন বলেন, আমাদের একমাত্র দাবি অযৌক্তিক পোষ্য কোটার সম্পূর্ণ বাতিল। কারণ এই কোটার জন্য অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাই না। যারা এই কোটার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, তাদের থেকে একরকম পৈতৃক উত্তরাধিকার আর চাই না। আমরা নতুন করে এসব পৈতৃক উত্তরাধিকার দেখতে চাই না। পৌষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমরা রেজিস্ট্রার বিল্ডিং ছাড়বো না।
গত রাতে ওয়ার্ড কোটার সম্পূর্ণ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সংস্কারের বিষয়ে এক মতৈক্যে পৌঁছান। সমঝোতা অনুযায়ী, পাস নম্বর ৩৫% থেকে বাড়িয়ে ৪০% করা হবে, কোটার সুযোগ কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য সীমিত থাকবে, একবারের বেশি এই সুবিধা নেওয়া যাবে না, এবং প্রতি সেশনে সর্বোচ্চ ৪০ জন শিক্ষার্থী এই কোটার আওতায় ভর্তি হতে পারবে।