বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:২৩ পিএম
আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৪০ পিএম
মানববন্ধনে কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ। প্রবা ফটো
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পোষ্য কোটা বহালের দাবিতে পাল্টা মানববন্ধন করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকাল ৯ টা থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই মানববন্ধন করেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘আপনারা জানেন আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতির সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের পোষ্য কোটার দাবি বহাল রেখে এই কোটার সিট আরও বৃদ্ধি করার জোর জানাচ্ছি।’
পরিষদের আহ্বায়ক আলতাফুর রহমান বলেন, ‘স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর এ বিষয় নিয়ে দাঁড়াতে হবে, তা আমাদের জন্য সত্যিই বিব্রতকর। দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং কর্মচারীদের অতিরিক্ত কিছু সুবিধা দিয়ে আসছে। যদি প্রজ্ঞাপন জারি করে দেশের সকল ধরনের কোটা বাতিল করা হয় তাহলে আমরা প্রশাসনের সাথে একমত পোষণ করব। আমরা মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুধু পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে যে আন্দোলন করছে তাদের এখানে ভুল আছে। পোষ্য কোটায় সিট দেওয়া নিয়ে এখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সিট নিয়ে কোন সমস্যা হচ্ছে না। আমরা মনে করি তাদের দাবি হওয়া উচিত খালি সিটে তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হোক।
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোঃ কামাল উদ্দিন বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তি শৃঙ্খলা ঠিক রাখা। আমরা ইতোমধ্যেই অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করেছি। আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেক বুঝদার। এছাড়া যে সমস্ত কর্মকর্তা কর্মচারী কোটা বহালের দাবিতে আন্দোলন করছেন সবাইকে নিয়ে আমরা রবিবার আলোচনায় বসবো। গণতান্ত্রিক ও যৌক্তিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে এটার সমাধান চাই। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা যাতে কোনোভাবেই বন্ধ না হয়। আশা করছি সবার মতামতের ভিত্তিতে আমরা সুন্দর সমাধানে পৌঁছাবো’
এর আগে বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর ১২ টায় পোষ্য কোটা বাতিল ও জুলাই আন্দোলনে হত্যাকারীদের বিচারসহ ৯ দফা দাবিতে আমরণ অনশনে যান শিক্ষার্থীরা। মোট ৮ জন শিক্ষার্থী বসেন। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে মধ্যরাতে অনশন থেকে ফিরে আসেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত ১০ টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ইয়াহ্ইয়া আখতার অনশনকারী শিক্ষার্থীদের দেখতে যান। তিনি শিক্ষার্থীদের খাবার খাইয়ে অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেন। তবে শিক্ষার্থীরা অনশন চালিয়ে যেতে অনড় ছিলেন। এর আগে কয়েক দফা উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, চবি প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙতে অনুরোধ করলেও শিক্ষার্থীরা রাজি হননি।
এরপর গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে পোষ্য কোটা বাতিলের ব্যাপারে তাদের আনুষ্ঠানিক আশ্বাস দেওয়া হয়। আশ্বাস পেয়ে শিক্ষার্থীরা আগামী রবিবার পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি স্থগিত করেন। রবিবার প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে পোষ্য কোটা সম্পূর্ণরূপে বাতিলের সিদ্ধান্তে না আসতে পারলে আবারও কঠোর অবস্থানে যাবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।