বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:৪৩ পিএম
মানববন্ধনে আন্দোলনকারীরা। প্রবা ফটো
এবার পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে পোষ্য কোটা বাতিল এবং জুলাই আন্দোলনে হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেন তারা।
দাবি আদায়ে ২৪ ঘণ্টার সময় সময়ও বেঁধে দিয়েছেন তারা। আগামীকাল ১২টার মধ্যে প্রশাসন তাদের সিদ্ধান্ত না জানালে আমরণ অনশনে যাবেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় শিক্ষার্থীদরা ‘জনে জনে খবর দে, পোষ্য কোটার কবর দে, তারুয়ার ক্যাম্পাসে পোষ্য কোটার ঠাই নাই, ফরহাদের ক্যাম্পাসে পোষ্য কোটার ঠাই নাই, বাতিল চাই বাতিল চাই,পোষ্য কোটার বাতিল চাই, বিচার চাই বিচার চাই, হত্যাকারীদের বিচার চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।
গতকাল সোমবার (৬ জানুয়ারি) পোষ্য কোটা বাতিল ও ভর্তি আবেদন ফি কমানো প্রসঙ্গে আন্দোলনকারী প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করেন প্রশাসন। এ সময় চবি ছাত্রদল ও ছাত্র শিবিরের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আন্দোলনকারী সূত্রে জানা যায়, পোষ্য কোটার ব্যাপারে নানাপক্ষের অংশীজনদের স্বার্থ বিবেচনায় বর্তমানে প্রচলিত ৩ শতাংশ কোটার বিপরীতে কর্মকর্তা, কর্মচারীরদের জন্য ১ থেকে দেড় শতাংশের মধ্যে পোষ্য কোটা বহাল রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। পরে অংশীজনের সাথে আলোচনার পর এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়। তবে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে ইতিহাস বিভাগের রশিদ দিনার বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর আমাদের কেন কোটা নিয়ে আন্দোলন করতে হবে? শহিদ ফরহাদ ও তরুয়ার রক্তের উপর বর্তমান প্রশাসন মসনদে বসেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে যুগ যুগ ধরেও আপনারা প্রশাসনের চেয়ারের আশেপাশেও আসতে পারতেন না। এটা তো আপনাদের স্বপ্রণোদিত হয়ে বাদ দেওয়ার কথা ছিল। আবার কেন আমাদের আন্দোলন করতে হচ্ছে?
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, এটা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রশাসনের জন্য লজ্জাজনক যে, জুলাই পরবর্তী সময়েও আমাদের কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করতে হচ্ছে। শহীদদের রক্তের উপর যে প্রশাসন দাঁড়িয়ে আছে সেই প্রশাসনের কাছে আমাদের ভাইদের হত্যার বিচার চাইতে হয়। আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, যদি বিচারের নামে প্রশাসন কোনো টালবাহানা করে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা তাদের বিচার নিশ্চিত করতে বাধ্য হবে। ২৪ এর আন্দোলনের পর আর কোনো কোটার যৌক্তিকতা নেই, আমরা আগামীকাল থেকে আমরণ অনশনে যাবো।
এর আগে মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটা ও পোষ্য বাতিল, ভর্তি আবেদন ফি কমানো ও চাকসু নির্বাচনসহ ৯ দফা দাবিতে ২৯ ডিসেম্বর থেকে আন্দোলন করে আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
গত ২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আন্দোলনকারীদের সাথে প্রশাসনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আন্দোলনকারীদের দাবির প্রেক্ষিতে পোষ্য কোটা বাতিলসহ শিক্ষার্থীদের ৯ দফা এবং অন্যান্য দাবি বাস্তবায়ন নিয়ে কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির ২য় সভায় একটি কমিটি গঠন করা হয়।