খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
খুলনা অফিস
প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৪ ২১:৫৫ পিএম
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৪ পিএম
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা সন্ত্রাস, ছাত্ররাজনীতি, র্যাগিং ও মাদককে ‘না’ বলে শপথ নিয়েছেন। রবিবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম নবাগত শিক্ষার্থীদের এ শপথ বাক্য পাঠ করান।
প্রথম বর্ষের ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ‘উইক অব ওয়েলকাম’ শীর্ষক ৫ দিনব্যাপী একাডেমিক ওরিয়েন্টেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য। আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উপাচার্য রেজাউল করিম বলেন, নবাগত শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সুন্দর ও স্মরণীয় দিন। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের পর সবার সঙ্গে পরিচিত হওয়া, ওরিয়েন্টেশনে রিসোর্স পারসনদের কথা মনোযোগ সহকারে শোনাÑ এসব স্মৃতি চিরদিন মনে গেঁথে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন হচ্ছে নিজেকে প্রস্তুত করে নেওয়ার শ্রেষ্ঠ সময়। শিক্ষার্থীদের পরবর্তী জীবনের গন্তব্য কী হবে, তা এখান থেকে নির্ধারিত হয়। এজন্য নতুন প্রজন্মের আত্মত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতার চেতনায় নিজেকে দেশাত্মবোধ ও সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়ে গড়ে উঠতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষাব্যবস্থার বড় ধরনের পরিবর্তনের মুখোমুখি হয় শিক্ষার্থীরা। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়টাতে অসৎসঙ্গের কারণে অনেকেই লক্ষ্য থেকে ছিটকে যায়। এগুলো পরিহার করতে হবে। জীবনকে ধ্বংসের পথে নেওয়া যাবে না। কোনো ক্ষেত্রেই হতাশ হওয়া যাবে না। জীবনকে সুন্দরভাবে সাজাতে হবে। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে।
উপাচার্য বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অনন্য এক বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে একই একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে সব ডিসিপ্লিনে ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়া হয়। ছাত্ররাজনীতি না থাকলেও নিজেকে বিকশিত ও নেতৃত্বগুণে সমৃদ্ধ করার জন্য এখানে অনেক ক্লাব/সংগঠন রয়েছে। কোনো শিক্ষার্থী যাতে র্যাগিংয়ের শিকার না হয়, সেজন্য কঠোর আইন রয়েছে। পাশাপাশি ছাত্রীরা যাতে যৌন নিপীড়নের শিকার না হয় সেজন্য যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেল রয়েছে। যৌন নিপীড়নে কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে বহিষ্কারসহ কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকিউএসির পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হারুনর রশিদ খাঁ, বিজ্ঞান প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলের ডিন (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. আবু শামীম মোহাম্মদ আরিফ, জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ ও চারুকলা স্কুলের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. শেখ সিরাজুল হাকিম। স্বাগত বক্তব্য দেন, আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক ড. মো. সালাউদ্দিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইকিউএসির উপ-রেজিস্ট্রার মো. নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনসমূহের প্রধানবৃন্দ এবং নবাগত শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ‘কপিং অ্যান্ড থ্রাইভিং ইন হায়ার এডুকেশন এনভায়রনমেন্ট’ শীর্ষক টেকনিক্যাল সেশনে ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং দ্য ইউনিভার্সিটি এনভায়রনমেন্ট’, ‘কমিটমেন্ট’, ‘পারসোনাল অ্যান্ড একাডেমিক গোলস’, ‘বিল্ডিং সোশ্যাল কানেকশন’, ‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’ এবং ‘ফিন্যান্সিয়াল সাপোর্টস’ বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। এ ছাড়াও আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. শামীম আহসান, ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম, খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শরিফ মোহাম্মদ খান টেকনিক্যাল সেশন উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে নবাগত শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন মুদ্রিত সমন্বিত প্রসপেক্টাস বিতরণ করা হয়। ওরিয়েন্টেশনের প্রথম দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, পরিসংখ্যান, ফার্মেসি, সয়েল ওয়াটার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট এবং প্রিন্টমেকিং ডিসিপ্লিনের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।