× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

অস্থিরতার মূলে শ্রেণিকক্ষ ভাগবাটোয়ারা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:৫৭ এএম

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দীর্ঘদিন ধরে চলমান শ্রেণিকক্ষ ভাগবাটোয়ারা নিয়ে সম্প্রতি নতুন করে অস্থির হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এই সমস্যা আবারও প্রকট হয়ে উঠেছে বলে জানা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনে এটির প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষ করা যাচ্ছে। 

জানা যায়, রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনে গত ৫ আগস্টের আগেই ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ চতুর্থ তলার শ্রেণিকক্ষগুলো নিজেদের আয়ত্তে নেয়। পরে আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ তৃতীয় তলার কক্ষগুলো দখল করে নেয়। এভাবে ধীরে ধীরে পুরো রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবন দখল হয়ে যায়। বিষয়টি সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ডিনকে শ্রেণিকক্ষ বণ্টনের দায়িত্ব দেন। তবে ডিনের দ্বারা বণ্টিত অফিস আদেশকে তোয়াক্কা না করে দখলদার বিভাগগুলো তাদের ক্লাস পরীক্ষা চালিয়ে যায়। 

গত ৮ অক্টোবর ডিন অফিসের মালামাল স্থানান্তরের সময় অফিস কর্মকর্তাদের বাধা ও সমস্যা তৈরি হয়। পরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সমাধান করে সংশ্লিষ্টরা। নিয়ম না মেনে কক্ষগুলো নিজেদের দখলে নেওয়ায় ভবনের কক্ষ বণ্টনে বিশৃঙ্খলা ও জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। পরে ২৩ অক্টোবর দুপুরে চারুকলা বিভাগের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনে নিজেদের বরাদ্দকৃত কক্ষ ব্যবহার করার সুযোগ না পেয়ে মানববন্ধন করেছে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। 

গত ৩ নভেম্বর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে শ্রেণিকক্ষ বণ্টন নিয়ে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, ফোকলোর স্টাডিজ ও চারুকলা বিভাগের ত্রিমুখী অবস্থানের চিত্র দেখা যায়। উপাচার্যের প্রাথমিক আশ্বাসের পর শিক্ষার্থীরা ফিরে যায়। পরে গতকাল সোমবার সকাল থেকে ফের আন্দোলন করে চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে ৩টায় তারা প্রশাসন ভবনের সামনে অনশন শুরু করে। লিখিতভাবে তাদের বরাদ্দকৃত জায়গা বুঝে না দেওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন। 

সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন কক্ষ বরাদ্দ পাওয়ার পরেও রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের কক্ষ কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে দখল করে রাখার অভিযোগ ওঠে কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের কয়েকটি বিভাগের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ সংকট নিরসনে রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবন ও অনুষদ ভবনের ডিন এবং বিভাগের সভাপতি মিলিত হয়ে সর্বসম্মতির ভিত্তিতে কক্ষ বণ্টনের একটি চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন করে। গত ৬ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ কর্তৃক এই তালিকার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান উপাচার্যের অনুমোদনের ভিত্তিতে কক্ষগুলো বণ্টনের জন্য কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক এমতাজ হোসেনকে অনুরোধ করেন। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে না এবং সমস্যা সমাধানের কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না বলে জানা যায়।

রবীন্দ্র-নজরুল কলা অনুষদের তৃতীয় তলা থেকে শুরু হয় অস্থিরতা। আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের বিরুদ্ধে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের জন্য বরাদ্দকৃত পুরো শ্রেণিকক্ষগুলো দখলের অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি তারা ডিন অফিসের কয়েকটি কক্ষ দখলে নেয় বলে জানা যায়। ফলে বরাদ্দ পেয়েও উঠতে পারেনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

অন্যদিকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ফোকলোর ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগগুলোও রবীন্দ্র-নজরুল কলা অনুষদের চতুর্থ তলায় জায়গা দখল করেছে। পঞ্চম তলায় আংশিক দখলের অভিযোগ উঠেছে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের বিরুদ্ধে। সবকিছু মিলিয়ে রবীন্দ্র-নজরুল ভবনের অস্থিরতা এখন দিন দিন বেড়েই চলেছে।

আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল মোত্তালেব বলেন, ‘ডিন মহোদয় থেকে নতুন একটি চিঠি এসেছে। সেখানে চতুর্থ তলা কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমাদের তৃতীয় তলায় থাকার যুক্তি আছে এবং আমরা তৃতীয় তলায় আছি।’

অন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকদের ভাষ্যমতে, ‘শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যা বলবে তাই মেনে নেব। তবে শিক্ষার্থীদের ওপর আমরা কোনো নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারি না। আমরা শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করেছি যেকোনো সংঘাত এড়িয়ে চলার জন্য।’

কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক এমতাজ হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি নিয়মের মধ্যে আনতে চাচ্ছি। বেদখলে থাকা কক্ষগুলো উদ্ধারের জন্য বিভাগগুলোতে চিঠি দিয়েছি। নিয়মের মধ্য থেকেই সবকিছুর সমাধান করতে চাই। প্রত্যেক বিভাগের সহযোগিতা ও আন্তরিকতা প্রয়োজন।’

প্রক্টর অধ্যাপক শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘উপাচার্য ও কলা অনুষদের ডিন ঢাকায় আছেন। এ ব্যাপারে তারাই সিদ্ধান্ত দিতে পারবে।’

উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘আমি ঢাকায় আছি। আগামীকাল ক্যাম্পাসে ফিরে সিদ্ধান্ত নেব। সমস্যাটি দ্রুত সমাধান হবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা