পাবিপ্রবি
নাজমুল হুদা, পাবিপ্রবি
প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৪৫ পিএম
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) আবাসিক হলের ডাইনিংয়ে খাবারের দাম বাড়লেও এর মান বাড়েনি বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে চাহিদা মেটাতে বাড়তি খাবারসহ নিত্যদিনের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের একমাত্র হল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল। সেখানে তিন বেলা সাধারণভাবে খাবার খেতে খরচ হয় ১০০ থেকে ১২০ টাকা। অতিরিক্ত আলু ভর্তা, বেগুন ভাজি দিয়ে একবেলা খাবার খেতেই খরচ পড়ে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। তবে খাবারের দাম বাড়লেও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্নাসহ খাবারের নিম্নমান নিয়ে অভিযোগ রয়েছে শিক্ষার্থীদের।
তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. জামি বলেন, ডাইনিং পরিচালনা কমিটির স্বেচ্ছাচারিতা দেখা যাচ্ছে। খাবার দেওয়ার সময়সূচির নির্ধারিত সময়ের পাঁচ মিনিট পরে গেলে আর খাবার দেওয়া হয় না। কিন্তু সেই খাবারই আবার রাতে বিক্রি করতে দেখা যায়। এ ছাড়া সকালে রুটির সঙ্গে সামান্য পরিমাণ সবজি দেওয়া হয় যা দিয়ে দুই পিস রুটি খাওয়া যায় না। কিন্তু সেই সবজিই আবার দুপুরে বিক্রি করতে দেখা যায়। শুধু ফ্লোর প্রতিনিধিরাই আলোচনা করে খাবারের দাম হুট করে বাড়িয়ে দিয়েছে। সাধারণ ছাত্রদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করার প্রয়োজন মনে করেনি তারা। যাদের আর্থিক সমস্যা তারা কীভাবে খাওয়া-দাওয়া করবে, এ বিষয় বিবেচনা করল না। ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা না করে দাম বাড়িয়ে ডাইনিং পরিচালনা কমিটি কীভাবে দাম বাড়াল? তিনি আরও বলেন, কর্তৃপক্ষকে বলব আপনারা যে টাকায় খাবার দিচ্ছেন সে টাকায় মেসে এর চেয়ে ভালো খাবার খাওয়া যায়। আপনাদের গ্যাস ফ্রি; বাবুর্চিসহ কর্মচারীদের বেতন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেয়। তারপরও খাবারের মান এমন কেন?
গত ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর নতুনভাবে হলে থাকার জন্য বৈধভাবে শিক্ষার্থীরা আবেদন জানান। যাচাই-বাছাই শেষে যেসব শিক্ষার্থী হলে থাকার জন্য মনোনীত হন তারাই কেবল আলটমেন্ট করে হলে থাকছেন। এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে ১১ জনের কমিটি করে হলের ডাইনিং পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
তাদের কাছে খাবারের মান ও টাকা বাড়ানোর বিষয়ে কথা বললে কমিটির অন্যতম সদস্য ও সবকিছু পরিচালনার সার্বিক দায়িত্বে থাকা সমাজকর্ম মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী শামীম হাসান বলেন, বাজারে সবকিছুর দাম বেড়েছে। আগের তুলনায় কিছু সবজির দাম ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মাছের দামও শুরুর দিকের তুলনায় ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং মুরগির কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে। ভর্তুকির কথা আমরা প্রশাসনের কাছে জানিয়েছি, কিন্তু প্রশাসন থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। যদি প্রশাসন ভর্তুকি দেয় অবশ্যই ভালোমানের খাবার দেওয়া সম্ভব হবে।
হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘হলের ডাইনিং নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অনেক ছিল। যারা ডাইনিং ব্যবস্থাপনায় ছিল তাদের সঙ্গে বসেছি। পরামর্শক্রমে ১ তারিখ ডাইনিং অন্য একজনকে ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দিয়েছি। ১৫ দিন দেখি ওরা খাবারের মান ঠিক রেখে চালাতে পারে কি না। তারপর প্রয়োজন হলে নতুন ব্যবস্থা নেব। আর ডাইনিং পরিচালনায় ভর্তুকি দেওয়ার ব্যাপারে সেন্ট্রালি আলোচনা হচ্ছে। আশা করি একটা ভালো সিদ্ধান্ত আসবে।’