প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:০৬ পিএম
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০২৩ এর তৃতীয় ধাপের (ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ) চূড়ান্ত ফলাফলের বিষয়ে আইনি জটিলতা নিয়ে শিগরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ।
তিনি বলেন, ‘ফলাফল প্রকাশের জন্য আমরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে মতামত চেয়েছিলাম। আমরা জানতে পেরেছি তারা এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে মতামতের জন্য ফাইল পাঠিয়েছিল। যতটুকু জেনেছি, আইন মন্ত্রণালয় থেকে তারা একটা মতামত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। যত দ্রুত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ফাইল আসবে এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত হবে। এটি দ্রুত পেলে চলতি মাসের মধ্যেই ফল প্রকাশ সম্ভব হবে।’
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুবিভাগের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ শামীম সোহেল বলেন, তারা আইন মন্ত্রণালয় থেকে মতামত পেয়েছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ফাইলটি যাচাই-বাছাই করে যত দ্রুত সম্ভব প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন।
এদিকে ৪ মাসের বেশি সময় অপেক্ষা করছেন তৃতীয় ধাপের ফল প্রত্যাশীরা। প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯ অনুযায়ী প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের ন্যায় দ্রুত সরকারি প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০২৩ এর তৃতীয় ধাপের (ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ) চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের জন্য তারা তিন মন্ত্রণালয়ে আবেদনও করেছেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং সচিব বরাবর এ আবেদন করেন তারা।
তিন মন্ত্রণালয়ে করা ওই আবেদনে ফল প্রত্যাশীরা বলেছেন, প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের জন্য আলাদা একটি বিধিমালা রয়েছে। যেটি প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯ নামে পরিচিত। উক্ত বিধিমালার অধীনেই প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়ে থাকে। প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ একটি বিশাল নিয়োগ কার্যক্রম হওয়ায়, নিয়েগে কার্যক্রম ধাপে ধাপে সম্পন্ন হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ১৪ জুন তাদের তৃতীয় ধাপের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। লিখিত পরীক্ষা গত ২৯ মার্চ সম্পন্ন হয় এবং সবশেষ মৌখিক পরীক্ষা হয় গত ১২ জুন। তাছাড়া প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ- ২০২৩ এর ১ম ও ২য় ধাপের চূড়ান্ত ফলাফল ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে সবশেষ প্রণীত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯ অনুসারেই ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।
আবেদনে তারা বলেন, যেহেতু প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের বিদ্যালয়ে নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। এমতাবস্থায়, শুধুমাত্র তৃতীয় ধাপে অন্য কোনো নীতি অনুসরণ করা হলে তা প্রশ্নবিদ্ধ, অযৌক্তি ও তাদের প্রতি বৈষম্য হবে। বিষয়টি নিয়ে তারা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। শিশুদের পাঠদানের ক্ষেত্রে নারীদের মাতৃত্বের কোমলতা, সহনশীলতা, দৈর্য এবং আনন্দের সহিত পাঠ দান লক্ষ্য করা যায়; যা শিশুদের শিখন পদ্ধতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া, প্রাথমিক শিক্ষকতায় প্রাথমিক শিক্ষকদের আদর্শ এবং নারী ও শিক্ষকদের সন্তানদের ভালোবাসা লক্ষ্য করা যায়। তাই বলা যায়, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষত নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ কে গুরুত্ব না দিলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট যেমন তৈরি হবে, কেমনি কোমলমতি শিশুরা মানসম্মত পাঠদান হতে বঞ্চিত হবে।
তারা আরও বলেন, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধি কোনো প্রজ্ঞাপন নয়, বিধিমালা। আইনের পর বিধিমালা, বিধিমালার পর প্রজ্ঞাপন, প্রজ্ঞাপনের পর অফিস আদেশ। সাম্প্রতিক প্রকাশিত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কোটা বিষয়ক প্রজ্ঞাপনের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯ সাংঘর্ষিক নয়। তারা জানতে পেরেছেন যে, আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের পরেই তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হবে। সুতরাং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সর্বশেষ প্রণীত সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা- ২০১৯ অনুসরণ করে ১ম ও ২য় ধাপের ন্যায় অতি দ্রুত প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০২৩ এর তৃতীয় ধাপের (ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ) চূড়ান্ত ফলাফল প্রদানের জন্য অনুরোধ করেছেন।