বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:৩৪ পিএম
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:৫২ পিএম
আওয়ামী লীগ ও স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর পদত্যাগের দাবিতে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয়েছেন হাজারো শিক্ষার্থী ও জনতা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে গণজমায়েত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছেন তারা। এ সময় তারা আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠন (ছাত্রলীগ, যুবলীগ ইত্যাদি) নিষিদ্ধেরও দাবি জানান।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বেলা ৩টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন তারা। সেখানে তারা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি জানান।
সোমবার ‘সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ও ফ্যাসিবাদের দোসর রাষ্ট্রপতি চুপ্পুর (রাষ্ট্রপতির ডাকনাম) পদত্যাগের দাবিতে বিপ্লবী ছাত্র-জনতার গণজমায়েত’ কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
সমাবেশে বক্তব্যের আগে শেখ হাসিনা, রাষ্ট্রপতি, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা ‘আমাদের সংগ্রাম, চলছে চলবে’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আওয়ামী লীগের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘ছাত্রলীগের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘স্বৈরাচারের দোসরেরা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘অবৈধ রাষ্ট্রপতি, মানিনা মানব না’ ‘আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করো করতে হবে’ ইত্যাদি বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে শহীদ মিনারে বেলা ৩টা থেকে প্রতিবাদ সভা শুরু হয়। এই সভা থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে মিথ্যাচার করে শপথ ভঙ্গের অভিযোগ করা হয়। তাই রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবি জানান।
গণজমায়েতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘কী খেয়ে, কার কথা শুনে, মানসিক অবস্থার কোন পর্যায়ে গিয়ে, এখন মুখ দিয়ে কার চক্রান্ত উচ্চারণ করছেন যে, আপনার কাছে পদত্যাগপত্র নাই। আমরা ফ্যাসিস্ট চুপ্পুসহ সব ফ্যাসিস্ট দোসরদের একটি কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আমরা যদি বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট ও খুনিদের কোনো উৎপাত লক্ষ্য করি ছাত্র-জনতা ৫ আগস্টের মতো ঐক্যবদ্ধভাবে তা প্রতিহত করবে।’
এ সময় তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদেরও দেশব্যাপী ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন স্পষ্ট বার্তা দিতে চায়, আবারও যদি প্রয়োজন হয়, আমরা আমাদের চোখ দিতে প্রস্তুত, পা দিতে প্রস্তুত, হাত দিতে প্রস্তুত, এমনকি জীবন দিতে প্রস্তুত আছি। ফ্যাসিস্ট দল ছাত্রলীগ যেভাবে আমাদের ভাইদের হত্যা করেছে, তাদের উত্থান সহ্য করা হবে না। জীবন দিয়ে হলেও ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ নামধারী ফ্যাসিস্টদের প্রতিহত করতে আমরা আমৃত্যু লড়াই করব।’
আরেক সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, আমরা এই শহীদ মিনার থেকে আমাদের বিপ্লব শুরু করেছিলাম। সেই বিপ্লবের ভয়ে বাংলাদেশ থেকে পালিয়েছিলেন ফ্যাসিস্ট হাসিনা। আর এখন, আপনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে জনতার সঙ্গে প্রতারণা করছেন। কারণ, আপনি ৫ আগস্টে যা বলেছেন, তা এখন কার নির্দেশে ভুলে গিয়ে নতুন কথা বলছেন? আমরা স্পষ্ট বলে দিতে চাই—খুনি হাসিনা যেভাবে পালিয়েছেন, চুপ্পুকেও পালাতে হবে।
এ সময় বৃহস্পতিবারের মধ্যে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ না করলে বঙ্গভবন ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এ সমন্বয়ক। তিনি বলেন, ‘সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান ঘোষণা না হওয়ার পর্যন্ত বিপ্লব চলবে।’