বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৪৪ পিএম
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৪৫ পিএম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) রেলস্টেশন এলাকায় দোকান দখলকে কেন্দ্র করে স্থানীয় যুবলীগ নেতা হানিফের অনুসারীদের হামলা, ভাঙচুর ও শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (২১ অক্টোবর) রাতে হাটহাজারী থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে চবি শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসীদের হামলার বিচারে ৬ দফা দাবি নিয়ে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, হাটহাজারী থানার উত্তর ফতেয়াবাদ এলাকার মৃত ইদ্রিছ সওদাগরের ছেলে মো. ইলিয়াছ প্রকাশ ফারুক (৪০), হাটহাজারী পৌরসভা পশ্চিম দেওয়ান নগর মৌলভী পাড়া আবুল বশর পোস্ট মাস্টার বাড়ির মহিবুল হকের ছেলে মো. সুমন (২৯), ফতেপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড ইসলামিয়ারহাট সৈয়দপাড়ার মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে মো. ইসতিয়াক আহমেদ (২২), একই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড লাল মিয়া সওদাগর বাড়ীর মো. আমির হামজার ছেলে মো. রাশেদ (৩০) ও একই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব ভবানীপুর (মধুপুর) ইসলাম মেম্বারের বাড়ীর মৃত ছালেহ আহমদের ছেলে মো. আবু তাহের (৫৫)।
জানা গেছে, সোমবার ভোর ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলগেট এলাকার অ্যাপায়ন নামে একটি দোকানে ভাঙচুর চালায় যুবলীগ নেতা হানিফের অনুসারীরা। এ সময় তারা কয়েক রাউন্ড গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে রেলগেট এলাকায় গিয়ে হানিফের একটি দোকান ভাঙচুর করেন। এতে যুবলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষ হয়েছে বলে গুজব রটিয়ে দেয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত হয়। এ ঘটনায় এজাহারনামীয় ৩০ জন এবং অজ্ঞাতনামা ২৫/৩০ জনের বিরুদ্ধে হাটহাজারী থানায় একটি মামলা করা হয়।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান জানান, সোমবার রাতে হাটহাজারী থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে চবির রেলস্টেশন এলাকায় হামলা, ভাঙচুর ও চবি শিক্ষার্থী মারধরের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত আছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ৬ দফা হলো-
যারা হামলা করেছে অস্ত্রধারী হানিফ ও তার সহযোগীদের আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ত্রাস সৃষ্টিকারী আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে আজকেই অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে, হাটহাজারী থানার ওসিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিতের স্বার্থে রেলগেট এবং এক নম্বর গেটে পুলিশ বক্স এবং সিসিটিভির ব্যবস্থা করতে হবে, গণহত্যায় অংশগ্রহণ ও সমর্থনকারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আইনে এবং একাডেমিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে ও দ্রুত সময়ের মধ্যে পুরো ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে স্বনামধন্য কোম্পানি থেকে হাই স্পিড ওয়াইফাই সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
চবি শিক্ষার্থী হাবিব উল্লাহ বলেন, আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে হানিফকে বিচারের আওতায় আনা হোক। এটা শুধু আমাদের দাবি না এটা এলাকাবাসীরও দাবি। সে এখানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। এছাড়া পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আমাদের প্রশ্ন রয়েছে। আমরা চাই হাটহাজারীর ওসিকে অতি দ্রুত প্রত্যাহার করা হোক।