শাখাওয়াত হোসেন সোহান, রাজবাড়ী
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ২১:০৩ পিএম
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ২১:২৪ পিএম
সহকারী শিক্ষক দীর্ঘ দুই বছর ধরে স্কুলে যান না। তবু নিয়মিত হাজিরা খাতায় উপস্থিত। তার নামে নিয়মিত বেতন তুলছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তার অনুপস্থিতিতে একজন প্রক্সি শিক্ষক থাকলেও তিনিও প্রায় তিন মাস স্কুলে আসেন না। ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের ইন্দুরদী উচ্চ বিদ্যালয়ে।
ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ইন্দুরদী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানবিভাগের সিনিয়র শিক্ষক অশোক কুমার ভৌমিক। প্রায় ১৪ বছর ধরে অসুস্থ। ভালোভাবে চলাচল করতে না পারায় দুই বছর ধরে স্কুলে যান না। চেকের পাতায় আগাম স্বাক্ষর করে রাখা হয়েছে প্রধান শিক্ষকের নিকট। প্রতি মাসেই বেতন-ভাতা উত্তোলন হয়। তবে পুরো টাকা পান না তিনি। অর্ধেক বেতন নেন তিনি আর অর্ধেক প্রধান শিক্ষক। তার অনুপস্থিতির কারণে সিরাজুল ইসলাম নামে একজনকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। তাকে ৫ হাজার টাকায় নিয়োগ দেওয়া হলেও তিনিও প্রায় তিন মাস ধরে স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। এছাড়া কর্মচারী নিয়োগে বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এসব কারণে স্কুলের শিক্ষার্থীরা পড়েছে বিপাকে।
সরেজমিন ইন্দুরদী উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা মেলেনি বিজ্ঞান শিক্ষক অশোক কুমার ভৌমিকের। তার অনুপস্থিতিতে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক সিরাজুল ইসলামকেও পাওয়া যায়নি। হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আলিমুজ্জামান গড়িমসি করে কথা বলা বন্ধ করে দেন। এ বিষয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষক অশোক কুমার ভৌমিকের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি তিনি।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, অশোক কুমার ভৌমিক অসুস্থ থাকার কারণে তিনি দুই বছর স্কুলে আসেন না। মানবিক কারণে তার বেতন দিই। তার বেতন থেকে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষককে ৮ হাজার টাকা দিতে হয়। বাকি টাকা তার অ্যাকাউন্টে চলে যায়। তবে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক কই জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশ কয়েকদিন স্কুলে আসছেন না তিনি। এখন থেকে আর কাউকে বেতন দেব না। আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি প্রধান শিক্ষক। নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ হয়েছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পারমিস সুলতানা বলেন, বিষয়টি প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. হাসিবুল হাসান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগও করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।