বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৪ ১৯:০৩ পিএম
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৪ ১৯:২৭ পিএম
ফাইল ফটো
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিভিন্ন আবাসিক হলে কক্ষ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির কর্মকর্তারা পদত্যাগ করায় তদন্ত বন্ধ রয়েছে।
বুধবার (১৪ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. মোজাম্মেল হোসেন বকুল প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিমি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে তদন্ত শুরু করলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ তদন্ত কমিটির অধিকাংশ কর্মকর্তা পদত্যাগ করায় তদন্ত বন্ধ রয়েছে। আমিও ব্যক্তিগতভাবে পদত্যাগ করেছি।’
এর আগে ২৬ জুলাই পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে আট সপ্তাহের মধ্যে ঘটনার বিবরণ, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবং সুপারিশ (কী করণীয়) সম্পর্কে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। এ ঘটনা তদন্তে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক এস এম এক্রাম উল্যাহকে আহ্বায়ক এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক বকুলকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
এরপর ২৮ জুলাই ক্ষতিগ্রস্ত হলগুলো পরিদর্শন করেন ততকালীন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারসহ প্রশাসনিক বডি। এ সময় আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষরা ১০টি হলের ১৫৮টি কক্ষ ক্ষতিগ্রস্তের বিবরণে প্রায় ৪ কোটি টাকা ক্ষতির কথা উল্লেখ করেন।
৩ আগস্ট শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে হল খোলার জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়। এরপর ৬ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় এক সপ্তাহের মধ্যে হল সংস্কার করে শিক্ষার্থীদের বসবাসের উপযোগী করা হবে।
গত ১৬ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে এবং সারা দেশের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চার ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনে বিক্ষোভকারীরা লাঠিসোটা ও রড নিয়ে অন্তত ছয়টি আবাসিক হলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কক্ষ ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে অন্তত ১৫টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুরসহ তাদের কক্ষে অভিযান চালিয়ে পিস্তল, বিদেশি মদ ও রামদা উদ্ধার করেন আন্দোলনকারীরা। বিক্ষোভ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ওইদিন ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে রক্ষা পায়।
এদিকে রেজিস্ট্রার তারিকুল হাসান ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার, সহউপাচার্য সুলতান-উল-ইসলাম ও হুমায়ুন কবীর, প্রক্টর আসাবুল হকসহ বর্তমান প্রশাসনের ৩১ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত বর্তমান প্রশাসনের মোট ৩৮ জন ব্যক্তি পদত্যাগ করেছেন।