চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৪ ২০:০০ পিএম
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৪ ২০:৪৪ পিএম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দুই শিক্ষকের বাসায় হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তাদের বাসার সামনে একাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ক্যাম্পাসস্থ শিক্ষক কলোনিতে এ ঘটনা ঘটে দাবি করে বুধবার (৩১ জুলাই) নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর চিঠি দিয়েছেন ভুক্তভোগীদের একজন।
ওই দুই শিক্ষক হলেন, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমান এবং দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক। তারা দুজনেই কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে সরব রয়েছেন। তাদের ধারণা— এই আন্দোলনকে ঘিরে শিক্ষার্থী হত্যা ও অন্যান্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানির বিপক্ষে সরব থাকার কারণে এ হামলা চালানো হতে পারে।
উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্রে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘রাত ২টায় (মঙ্গলবার) আমার বাসার সামনে আনুমানিক ১৬/১৭ জন তরুণ ৬/৭টি মোটরসাইকেলে করে এসে আমার নাম ধরে উচ্চস্বরে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। তারা আনুমানিক ৭/৮ মিনিট অবস্থান করে। এ সময় তারা তিনটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এরপর পশ্চিম দিকে চলে যায়। বাসার সামনে ডিউটিরত প্রহরীরা ও আশপাশের প্রতিবেশীরা এই চরম অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সাক্ষী। বাসার সামনে ইলেক্ট্রিক পোলে লাগানো সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আক্রমণকারীদের চিহ্নিত করা সম্ভব। এ ঘটনার পর ব্যক্তিগতভাবে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আশা করছি, এ ব্যাপারে আপনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
জানতে চাইলে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘৩০ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছি, কখনো এমনটি হয়নি। কোটা সংস্কার আন্দোলনে আমার ভূমিকার কারণেই এমনটি ঘটেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হামলার পরপরই দেখলাম একটা পুলিশের গাড়িও সেদিক দিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের তো দায়িত্ব ছিল এই বন্ধ ক্যাম্পাসে ৭/৮টা বাইক নিয়ে এত রাতে ঘুরে বেড়ানো, বোমা ফোটানো এসব মানুষ কারা, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা।’
হামলার বিষয়ে অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমান বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত সোয়া ২টার দিকে ৭/৮টা মোটরসাইকেল নিয়ে পাহাড়িকা হাউজিং সোসাইটিতে আমার বাসার সামনে আসে তারা। এ সময় স্টিলের দরজায় আঘাত করে ও আমার নাম ধরে চট্টগ্রামের ভাষায় গালাগালি করতে থাকে। তারা তিনটি বোমও ফোটায়। কিছুক্ষণ পর অন্য বাসা থেকে একজন তাদের পরিচয় জানতে চাইলে চলে যায়।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সারা দেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আমরা আজ মানববন্ধন করেছিলাম। এরপর উপাচার্যের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় আমরা সব শিক্ষকরা মিলে শিক্ষকদের বাসায় হামলার বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ব্যবস্থাগ্রহণের আশ্বাসও দিয়েছেন।’
এ বিষয়ে প্রক্টর ড. অহিদুল আলম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘হামলার বিষয়ে মোজাম্মেল স্যার একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা পুলিশ প্রশাসনকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি অনুসন্ধান করেছি। পাশাপাশি পুলিশকে বলে দেওয়া হচ্ছে ক্যাম্পাসে যাতে কেউ ঘোরাফেরা করলে এখন থেকে অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।’