× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কর্মসূচি প্রত্যাহার নিয়ে রাবিতে কোটা আন্দোলনকারীদের পাল্টাপাল্টি অবস্থান

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৪ ১৮:৩০ পিএম

আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৪ ১৯:২৬ পিএম

কর্মসূচি প্রত্যাহার নিয়ে রাবিতে কোটা আন্দোলনকারীদের পাল্টাপাল্টি অবস্থান

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের আট দফা দাবি জানিয়ে ৩০ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে সব ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। আন্দোলনকারীদের আরেকটি অংশ বলছে— সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা না করে নিজেদের ইচ্ছেমতো এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যারা কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন, তারা আন্দোলনের নেতৃত্বেও ছিলেন না। এর প্রেক্ষিতে রাবিতে শুরু থেকেই কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকা সালাহুদ্দিন আম্মার বলছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এখনও আন্দোলন থেকে সরে আসেনি। তাই ‘বৃহৎ আন্দোলনের’ প্রয়োজনে নিজেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ঘোষণা করেছেন তিনি।

সালাহুদ্দিন আম্মা নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টসহ বিভিন্ন গ্রুপে বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এখনও আন্দোলন থেকে সরে আসেনি। যারা প্রেস ব্রিফিং (কর্মসূচি প্রত্যাহার) করেছেন, তারা আগেই পদত্যাগ করেছেন। বৃহৎ আন্দোলনের প্রয়োজনে নিজেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ঘোষণা করছি।’ একই সঙ্গে দাবি করেন, কেন্দ্রের সমন্বয়ক কমিটির সঙ্গে কথা বলে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরুতে ‘কোটাপদ্ধতি সংস্কার আন্দোলন’-এর ব্যানারে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু সারা দেশের আন্দোলনের সঙ্গে সমন্বয় করতে ব্যর্থ– এমন অভিযোগ তুলে ১১ জুলাই শিক্ষার্থীদের একাংশ সেই  সমন্বয়ক কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। এরপর থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে সব ধরনের কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

সারা দেশে শিক্ষার্থীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ও এর প্রেক্ষিতে কারফিউ জারির মধ্যে ব্যাপক সংঘাতের পর আন্দোলনকারীদের দাবি অনুযায়ী চাকরিতে কোটাপদ্ধতি সংশোধন করে গত মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।

এরপর গত বৃহস্পতিবার আট দফা দাবি জানিয়ে ৩০ কর্মদিবসের সময় বেঁধে দিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সব ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় রাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে এসব দাবি মানা না হলে আবার মাঠে নামার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানানো হয়।

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা না করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলছেন আন্দোলনকারীদের আরেকটি অংশ। যা উচিত হয়নি বলে মনে করেন তারা।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী পারভেজ বলেন, ‘সমন্বয়ক কমিটি গঠন করে বাতিল করা হলো। সেসময় বলা হয়েছিল রাবির আন্দোলনে কোনো সমন্বয়ক থাকবে না। সে হিসেবেই আন্দোলন চলছিল। কিন্তু ইন্টারনেট বন্ধ, কারফিউর মধ্যে তারা কে বা কাদের সঙ্গে আলোচনা করল আমার বুঝে আসে না।’

‘এখানে তাদের কোনো স্বার্থ থাকতে পারে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে হঠাৎ করে এই সংবাদ সম্মেলন,’ বলেন তিনি।

আরেক শিক্ষার্থী সুমাইয়া তাবাসসুম বলেন, ‘শুনেছি প্রথমে যে সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল সেখানে অধিকাংশই একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিল। যারা নিজেদের সমন্বয়ক মনে করে সংবাদ সম্মেলন করেছে (কর্মসূচি প্রত্যাহার) এদেরও স্বার্থ থাকতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে তো বৃহৎ অর্থে আন্দোলন স্থগিত বা বন্ধের কোনো কথা বলা হয়নি। মূল দাবি আদায় হয়েছে সেটা অবশ্যই ভালো কথা। কিন্তু এরপর মামলা এবং হুমকির ভয়ে আছে অনেকে। এজন্য আগেই আন্দোলন এভাবে প্রত্যাহার করা উচিত না বলে মনে করি।’

সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নিজেকে সমন্বয়ক ঘোষণা করা সালাহুদ্দিন আম্মার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলনকারীরা আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিল না। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা না করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা কারও ভয়ে বা হুমকিতে এটা করতে পারে। ক্যামেরার সামনে তাদের চোখে ভয় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। তবে এর বাইরেও তাদের কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে কি না সে বিষয়ে কথা বলব।’

এদিকে নিজের ফেসবুকে এক পোস্টে সালাহুদ্দিন আম্মার বলেন, ‘আমি যদি প্রেস ব্রিফিং করি বা ঘোষণা দিই, তাহলে সকলে বুঝবেন যে এটাই সত্য। ৫২ সদস্যের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সঙ্গে কথা বলে আমি এ সিদ্ধান্ত নিলাম। আশা করি, আপনারা ভুল তথ্য পাবেন না আর। আন্দোলনকারী শত শত শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করব বলে আন্দোলন শুরু করিনি। শুরু থেকেই ছিলাম এবং শেষ পর্যন্ত থাকব। কেন্দ্রের সমন্বয়করা যখন আন্দোলন শেষ ঘোষণা করবে তখন আমরা রাবিয়ানরাও শেষ ঘোষণা করব।’

কর্মসূচি প্রত্যাহারের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রেজওয়ান গাজী মহারাজ। কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘আমি ১২ তারিখের পরই সমন্বয়ক থেকে পদত্যাগ করেছি। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনের দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম থাকায় আমায় সেখানে থাকতে বললে আমি শুধু বসেছিলাম। কারও কোনো ভয়ভীতিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়নি। তবে আমার মনে হয়, বাকিদের অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৬ তারিখ যারা নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের আন্দোলনেই কিন্তু অগ্নিকাণ্ড এবং হল ভাঙচুর হইছে। এর ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে যে মামলা হয়েছে সে দায়ভার তাদের নিতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে তার সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন তোফায়েল আহমেদ তপু, সুজন কুমার ভৌমিক, মনিমুল হক ও মোকারম হোসেন। তবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা