সর্বজনীন পেনশন
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৪ ২২:৫৮ পিএম
আপডেট : ০২ জুলাই ২০২৪ ০৯:১৫ এএম
সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ স্কিম বাতিলের দাবিতে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দপ্তরে দপ্তরে তালা ঝুলিয়ে এ আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছেন তারা সবাই। লাগাতার কর্মবিরতির প্রথম দিনে সোমবার (১ জুলাই) বন্ধ ছিল সব ক্লাস-পরীক্ষা ও দাপ্তরিক কার্যক্রম। বন্ধ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার। ছিল না শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানও বর্জন করেছেন ঢাবির শিক্ষক সমিতির নেতারা। সব মিলিয়ে কর্মবিরতিতে কার্যত অচল ছিল সব বিশ্ববিদ্যালয়। আন্দোলনকারীরা বলছেন, প্রত্যয় স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত চলবে সর্বাত্মক এ কর্মবিরতি। এদিকে আন্দোলনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশনজট তৈরির আশঙ্কা করছেন পর্যবেক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষকরা বলছেন, নতুন পেনশন ব্যবস্থায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধা কমিয়ে আনা হয়েছে। তারা বলছেন, প্রত্যয় স্কিমে মূল বেতন থেকে ১০ শতাংশ অর্থ কেটে নেওয়া হবে। যেটা আগে কাটা হতো না। এ স্কিমে আনুতোষিক শূন্য। বর্তমানে পেনশনার ও নমিনি আজীবন পেনশনপ্রাপ্ত হন; কিন্তু নতুন এ স্কিমে পেনশনাররা ৭৫ বছর পর্যন্ত পেনশন পাবেন। বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থায় ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট পাওয়া যায়। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় সেটা সুস্পষ্ট করা হয়নি। সব থেকে বড় বিষয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদকাল ৬৫ থেকে ৬০ বছর করা হয়েছে। মাসিক চিকিৎসাভাতা, উৎসবভাতা, বৈশাখী ভাতা নতুন প্রত্যয় স্কিমে দেওয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য যে প্রত্যয় স্কিম আরোপ করা হয়েছে, তা তাদের পারিবারিক সুরক্ষা নষ্ট করছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষকদের দাবি, প্রত্যয় কর্মসূচির প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে (প্রশাসনে জ্যেষ্ঠ সচিবরা যে ধাপে বেতনভাতা পান) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন। আর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি শুধু প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন বাতিল।
আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বলছেন, প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে আমরা শিক্ষকরা যে আন্দোলন করছি, সেটা শুধু আমাদের আন্দোলন নয়। এ আন্দোলন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও। আমরা যারা ১ জুলাইয়ের আগে শিক্ষকতার চাকরিতে যোগদান করেছি তারা এই প্রত্যয় স্কিমের কারণে ভুক্তভোগী হব না। কিন্তু ১ জুলাইয়ের পর যারা এ পেশায় আসবেন, তারা এই বৈষম্যের শিকার হবে। আমরা দায়বদ্ধতা থেকে এই আন্দোলনে নেমেছি।
ঢাবিতে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রোগ্রাম বর্জন
সর্বজনীন প্রত্যয় স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহারের দাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান বয়কট করেছেন ঢাবি শিক্ষক সমিতির নেতারা।
সোমবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নেননি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা। তবে শিক্ষকদের অনেকেই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অংশ নেন। জিনাত হুদার নেতৃত্বে এক দল শিক্ষক কলা ভবনের ফটকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া অসুস্থতার কারণে থাকতে পারেননি বলে জানান শিক্ষকরা।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান বয়কটের বিষয়ে অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, ‘আমরা সর্বাত্মক কর্মবিরতি ঘোষণা করেছি। তাই প্রতীকীভাবে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেননি। তবে যারা যেতে ইচ্ছুক, তাদের আমরা বারণ করিনি।’ প্রত্যয় স্কিম বাতিলসহ অন্যান্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করা হবে বলে জানান জিনাত হুদা।
অচলাবস্থা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষক সমিতি, অফিসার সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়নের ত্রিমুখী আন্দোলনে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক অচলাবস্থা বিরাজ করছে। ক্লাস, পরীক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল দাপ্তরিক কাজ বন্ধ রয়েছে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি কার্যালয়ে কর্মবিরতি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। দাপ্তরিক কাজ না করে অফিসার সমিতির কার্যালয়ে অবস্থান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসাররা। প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা।
চবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এবিএম আবু নোমান বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য আলাদা পে-স্কেলের আন্দোলন করছিলাম। এরই মধ্যে দেখি মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘাÑ অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রত্যয় স্কিমে যোগদান করতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যদি সামাজিক সুরক্ষা না থাকে, তাহলে মেধাবীদের আর এখানে শিক্ষক হওয়ার আকাঙ্ক্ষা থাকবে না।’
চবি কর্মচারী ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘প্রজ্ঞাপন অনুসারে আজ থেকে যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী হিসেবে যোগ দেবেন, তাদের সঙ্গে বর্তমান কর্মচারীদের বড় ধরনের বৈষম্য তৈরি হবে। এ ধরনের বৈষম্যমূলক পেনশন স্কিম আমরা চাই না।’
রাবিতে প্রথম বর্ষের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত
বিশেষ কোনো কারণ উল্লেখ না করেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। ভর্তি কার্যক্রম পুনরায় শুরুর তারিখ পরে জানানো হবে। সোমবার বিকালে জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রণব কুমার পান্ডে স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে, সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বাতিলের আন্দোলনের অংশ হিসেবে সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা দেন শিক্ষকরা। রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, এই কর্মবিরতি কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য কোনো দায়িত্ব পালন করবেন না।
স্বতঃস্ফূর্ত কর্মবিরতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে দেওয়া বক্তব্যে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান বলেন, ‘প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে আমরা শিক্ষকরা যে আন্দোলন করছি, সেটা শুধু আমাদের আন্দোলন নয়। এ আন্দোলন আমাদের শিক্ষার্থী ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও।’ তিনি বলেন, ‘একটি মহল এ আন্দোলনকে বিতর্কিত করার জন্য, শিক্ষার্থীদের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছানোর জন্য গুজব ছড়াচ্ছে যে এই আন্দোলন আমাদের স্বার্থে। কিন্তু আসলে এ আন্দোলন ভবিষ্যতে যারা শিক্ষকতায় আসবেন, তাদের জন্য।’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সব কার্যক্রম বয়কট করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকরা। এ সময় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘সামাজিক সম্মান ছাড়া আর তেমন কোনো কিছুই অর্জন করার সুযোগ নেই শিক্ষকতা পেশা থেকে। কিন্তু এই পেনশন স্কিম বিদ্যমান যে সুযোগ-সুবিধা সেগুলোকেও সংকুচিত করছে। এমন হলে মেধাবীরা শিক্ষকতায় আসবেন না। যার প্রভাব পড়বে সবখানে।’
রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
রংপুরের রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক সমিতির অস্থায়ী কার্যালয়ে। পূর্বঘোষিত এ কর্মসূচির সময় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কম ছিল। একাডেমিক কার্যক্রম না থাকায় কর্মচারীদের অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী জামিউল ইসলাম এবং বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আমিরুল ইসলাম খান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী যারাই আন্দোলন করুক না কেন, এতে শিক্ষার্থীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেবলই সেশনজট সমস্যা কাটিয়ে উঠেছিল। কিন্তু নতুন করে এ আন্দোলনের কারণে আবারও সেশনজট ফিরে আসার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. বিজয় মোহন চাকী বলেন, ‘প্রত্যয় স্কিম’ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস, পরীক্ষা, সমন্বয় সভা, ভর্তি কার্যক্রম ও প্রভোস্ট অফিস বন্ধ থাকবে।’
অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও কর্মসূচি পালন
প্রতিদিনের বাংলাদেশের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও (পবিপ্রবি) স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর্মবিরতি পালন করেছেন শিক্ষকরা। এ সময় অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘নতুন যে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।’ দাবি না মানা হলে সামনে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেন তিনি।
এ বিষয়ে পবিপ্রবির ডেইরি সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মতিন বলেন, ‘প্রত্যয় স্কিমের আওতায় গেলে নতুন যারা শিক্ষক হবে, তারা সবাই আগের অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকেই বঞ্চিত হবে। এই স্কিমের মাধ্যমে শিক্ষকদেরই অসম্মানিত করা হচ্ছে।’
শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সর্বাত্মক কর্মবিরতে অচল ছিল কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। সোমবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন কর্মকর্তারা। পরে দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত অনুষদ ভবনের নিচে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান (মুকুট) জানিয়েছেন, নতুন স্কিম প্রত্যাহারের দাবিতে তারা অনড় রয়েছেন।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কেন্দ্রীয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে আমরা সর্বাত্মক কর্মবিরতি দিয়েছি। কর্মবিরতির অংশ হিসেবে সকল প্রকার ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ আছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’
কিশোরগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহারের দাবিতে পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বর্ষের ক্লাস, পরীক্ষা ও ল্যাব বন্ধ রয়েছে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) গ্রাউন্ড ফ্লোরে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষক ও কর্মচারীরা। এ প্রসঙ্গে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোহাম্মদ আবদুল বাতেন চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের কর্মসূচির সঙ্গে একাত্ম হয়ে তারা কর্মবিরতি করছেন। শিক্ষার্থীদের সেশনজটের আশঙ্কার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আন্দোলন দীর্ঘদিন চলমান থাকলে কিছুটা সেশনজট হতে পারে। তবে আমরা শিক্ষকরা চেষ্টা করব, অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে হলেও শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিতে।’
সেশনজটের শঙ্কার বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূইয়া বলেন, ‘এ সমস্যা সারা বাংলাদেশের। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এ সমস্যা থেকে উত্তরণের।’
এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরেও বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও অফিসিয়াল কার্যক্রম বয়কট করে সর্বাত্মকভাবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার যাত্রা শুরু হয় গত বছরের ১৭ আগস্ট। বর্তমানে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় মোট পাঁচটি কর্মসূচি (স্কিম) রয়েছে। এগুলো হলো- প্রগতি, সুরক্ষা, প্রবাস, সমতা ও প্রত্যয়। এর মধ্যে প্রত্যয় স্কিমে অন্তর্ভুক্ত থাকবে সব ধরনের স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীনস্থ অঙ্গ-প্রতিষ্ঠানগুলো। সরকার জানিয়েছে, সোমবার ১ জুলাই থেকে যারা নতুন চাকরিতে যোগ দিয়েছেন বা দিচ্ছেন, তাদের বাধ্যতামূলকভাবে প্রত্যয় পেনশন কর্মসূচিতে যোগ দিতে হবে।
(প্রতিবেদনটিতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেকরা)