পেনশন স্কিম
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৪ ০৯:০০ এএম
আপডেট : ০১ জুলাই ২০২৪ ১১:৩৯ এএম
আজ ১ জুলাই চালু হচ্ছে নতুন পেনশন কর্মসূচি ‘প্রত্যয়’। কিন্তু এটি চালুর দিন থেকে সারা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালেয়ে অচলাবস্থা তৈরি হতে যাচ্ছে। এই পেনশন কর্মসূচির বিরুদ্ধে আগে থেকেই আন্দোলন চালিয়ে আসছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। ফেডারেশনের দাবি ও ঘোষণা ছিল, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এই কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। ৩০ জুনের মধ্যে এ দাবি মেনে না নিলে ১ জুলাই থেকে তারা সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাবেন। আজ সেই সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু হচ্ছে। এক্ষেত্রে শিক্ষকরা দল-মত নির্বিশেষে একাট্টা। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকরাই এ আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন। তারা বলছেন, এ আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে। শিক্ষকদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তারাও ডাক দিয়েছেন কর্মবিরতির।
গত ২০ মে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহার এবং পূর্বের পেনশন স্কিম চালু রাখার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। তার ধারাবাহিকতায় গত ২৬ জুন বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এরপর ২৮ মে দুই ঘণ্টা এবং ২৫ থেকে ২৭ জুন তিন দিন সারা দেশে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হয়। তাছাড়া গতকাল ৩০ জুন পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করা হয়।
এই অবস্থার মধ্যেও ‘প্রত্যয়’ চালু করতে অনড় জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ গত মার্চের মাঝামাঝি এটি চালুর বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করার পর পেনশন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত, স্বশাসিত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা ও তাদের অধীন অঙ্গ-প্রতিষ্ঠানগুলোতে আজ ১ জুলাই থেকে যারা নতুন চাকরিতে যোগ দেবেন, তাদেরকে বাধ্যতামূলকভাবে প্রত্যয় পেনশন কর্মসূচিতে যোগ দিতে হবে। এসব সংস্থার নতুন চাকরিজীবীরা অবসরে যাওয়ার পর প্রচলিত পদ্ধতিতে পেনশন পাবেন না। দেশে স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা ও তাদের অধীন অঙ্গপ্রতিষ্ঠান মিলে প্রায় ৪০০ সংস্থা রয়েছে। এ ধরনের সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, প্রত্যয় স্কিমে মূল বেতন থেকে ১০ শতাংশ অর্থ কেটে নেওয়া হবে। যেটা আগে কাটা হতো না। এ স্কিমে আনুতোষিক শূন্য। বর্তমানে পেনশনার ও নমিনি আজীবন পেনশনপ্রাপ্ত হন; কিন্তু নতুন এ স্কিমে পেনশনাররা ৭৫ বছর পর্যন্ত পেনশন পাবেন। বিদ্যমান পেনশনব্যবস্থায় ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট পাওয়া যায়, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় সেটা সুস্পষ্ট করা হয়নি। সব থেকে বড় বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদকাল ৬৫ থেকে ৬০ বছর করা হয়েছে। মাসিক চিকিৎসাভাতা, উৎসবভাতা, বৈশাখী ভাতা নতুন প্রত্যয় স্কিমে প্রদান করা হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য যে প্রত্যয় স্কিম আরোপ করা হয়েছে, তা তাদের পারিবারিক সুরক্ষা নষ্ট করছে। এসব কারণ উল্লেখ করে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এ স্কিম বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে আজ তারা সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবেন। এর আগেও নানা কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। তাদের দাবি, এমনিতেই শিক্ষকদের বেতনভাতা, সুবিধা কম। আবার বিদ্যমান পেনশনের মতো এই পেনশনে সব সুযোগ-সুবিধা নেই । এ অবস্থায় যদি এই পেনশন চাপিয়ে দেওয়া হয় তাহলে মেধাবীরা আর শিক্ষকতা পেশায় আসতে আগ্রহী হবেন না।
এদিকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থা বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকারমূলক কর্মসূচি। এ কর্মসূচিতে দেশের সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করতে চায় সরকার। ইতোমধ্যে যার ঘোষণাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের বিরোধিতায় শুরুতেই হোঁচট খাবে এ কর্মসূচি। যদিও যে সংগঠনের নেতৃত্বে এ আন্দোলন হচ্ছে সেই বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতৃত্ব রয়েছেন আওয়ামীপন্থি হিসেবে পরিচিত শিক্ষকরা। সারা দেশের বেশিরভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বেও রয়েছে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা।
দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে ৫৫টি, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সংখ্যা সাড়ে ১৬ হাজার, আর কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে ৩৪ হাজার ৩৮২ জন।
সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থার যাত্রা শুরু হয় গত বছরের ১৭ আগস্ট। বর্তমানে সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থায় মোট পাঁচটি কর্মসূচি (স্কিম) রয়েছে। এগুলো হলোÑ প্রগতি, সুরক্ষা, প্রবাস, সমতা ও প্রত্যয়। এর মধ্যে প্রত্যয় স্কিমে অন্তর্ভুক্ত থাকবে সব ধরনের স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীন অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলো।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, পেনশন একটা সুরক্ষা বলয়। সে জায়গায় শিক্ষকদের প্রত্যয় স্কিমে যুক্ত করে সুরক্ষা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তারা (শিক্ষক) বিদ্যমান স্কিমে চিকিৎসা ভাতা, উৎসব ভাতা ও পহেলা বৈশাখের একটি ভাতা পান। প্রত্যয় স্কিমে সেগুলো নেই।
তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের বর্তমান স্কিম নিয়ে কোনো সমালোচনা করিনি, আমরা বলিনি বিদ্যমান পেনশন স্কিম খারাপ। আমরা বলেছি, যারা পেনশনে নেই তাদের পেনশনের অধীনে নিয়ে আসা। সে জায়গায় যাদের পেনশন আছে, তাদের নিয়ে আসা হলো কেন?
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) অধ্যাপক ড. হাসিনা খান বলেন, শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধা আরও বাড়ানো উচিত। তাতে মেধাবীরা এ পেশায় আসতে আগ্রহী হবে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সবার প্রতি আহ্বান জানাই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাটির সমাধান করা হোক।
অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঢাবির ক্লাস-পরীক্ষা : অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণাসহ ৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। সর্বজনীন প্রত্যয় স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী ১ জুলাই সর্বাত্মক আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দেন তারা।
রবিবার (৩০ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদার যৌথ স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈষম্যমূলক প্রত্যয় স্কিম থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার, শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মবিরতি পালন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ছাড়াও ৯ দফা সর্বাত্মক আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও অভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচি : একই দাবিতে আজ সোমবার থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এ আন্দোলন কর্মসূচির কথা জানান।
মাশরিক হাসান বলেন, আমরা আগেই বলেছিলাম আমাদের দাবি না মানলে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাব। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। তাই আমরা কাল থেকে কোনো কাজ করব না, কোনো সাইন পর্যন্ত করব না।
তিনি বলেন, আগামীকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন-অফলাইন ক্লাস হবে না, শুক্রবারেও কোনো ক্লাস হবে না, প্রফেশনাল কোর্সেরও কোনো ক্লাস হবে না।
এদিকে রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং দুপুর ১২টা থেকে ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
রবিবার একই কর্মসূচি পালন করে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্বদ্যিালয় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু হতে যাচ্ছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ওমর ফারুক সরকার তাদের আন্দোলন সম্পর্কে বলেন, আমরা একরকম বৈষম্যের শিকার। আজকে কোনো শিক্ষক যদি চাকরিতে যোগ দেন তাহলে তিনি প্রত্যয় স্কিমের আওতার বাইরে থাকবে, আবার আগামীকাল ১ জুলাই থেকে যদি যোগ দেন তাহলে তিনি প্রত্যয় স্কিমের আওতায় আসবেন। চাকরি শেষে দেওয়ার জন্য তার বেতন থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা কেটে নেওয়া হবে। এটা কিন্তু প্রশাসনের কোনো বাহিনীর জন্য করা হয়নি। শুধু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য। এটা আমাদের জন্য অপমানজনক।
প্রত্যয়ে যা থাকবে
বর্তমানে সরকারি কর্মচারীরা সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিল (জিপিএফ) এবং স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলো প্রদেয় ভবিষ্যৎ তহবিলে (সিপিএফ)s টাকা জমা রাখে, যার বিনিময়ে সরকার ১১ থেকে ১৩ শতাংশ হারে সুদ দেয়। যেসব সরকারি কর্মচারী রাজস্ব খাত থেকে বেতন পান, তারা টাকা রাখেন জিপিএফে। আর যারা রাজস্ব খাতের বাইরে থেকে বেতন পান, তারা টাকা রাখেন সিপিএফে। পেনশনে যাওয়ার পর তারা এই টাকা পেয়ে থাকেন।
বিদ্যমান সিপিএফ ব্যবস্থায় কর্মচারী মূল বেতনের ১০ শতাংশ এবং প্রতিষ্ঠান মূল বেতনের ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ দেয়। প্রত্যয় কর্মসূচিতে প্রতিষ্ঠান দেবে মূল বেতনের সমান অর্থাৎ ১০ শতাংশ। বিদ্যমান সিপিএফব্যবস্থা থেকে তা ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি। প্রত্যয় কর্মসূচিতে একজন কর্মচারীর নিজ বেতন থেকে মাসিক ২ হাজার ৫০০ টাকা এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান একই পরিমাণ টাকা ৩০ বছর চাঁদা দিলে অবসরের পর অর্থাৎ ৬০ বছর বয়স থেকে ওই কর্মচারী মাসিক ৬২ হাজার ৩৩০ টাকা হারে পেনশন পাবেন।
অর্থ বিভাগ থেকে বলা হচ্ছে, প্রত্যয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য কর্মচারীদের মূল বেতনের ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকাÑ এ দুয়ের মধ্যে যেটা কম তা তাদের বেতন থেকে কাটা হবে এবং সমপরিমাণ অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা দেবে। এরপর উভয় অর্থ জমা হবে পেনশন কর্তৃপক্ষের তহবিলে। অর্থ বিভাগ বলেছে, ৩০ বছর ধরে মাসিক ২ হাজার ৫০০ টাকা হারে চাঁদা দিলে একজন কর্মচারীর নিজ বেতন থেকে চাঁদা জমা হবে ৯ লাখ টাকা আর সংশ্লিষ্ট সংস্থা জমা করবে আরও ৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর মোট চাঁদা হবে ১৮ লাখ টাকা। তিনি যদি ৭৫ বছর বয়সে মারা যান, তাহলে ১৫ বছরে পেনশন পাবেন ১ কোটি ১২ লাখ ১৯ হাজার ৪০০ টাকা, যা সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর নিজ জমার ১২ দশমিক ৪৭ গুণ।
অর্থ বিভাগ আরও বলেছে, পেনশনের সুবিধা আজীবন মিলবে বলে এ অঙ্ক আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে। এ ছাড়া বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্য মুনাফার হার বৃদ্ধি পেলে মাসিক পেনশনের পরিমাণও বাড়বে। পেনশন কর্মসূচি রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টিযুক্ত হওয়ায় শতভাগ ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ এবং পেনশনের অর্থ আয়করমুক্ত। এ কর্মসূচিতে নিবন্ধিত কর্মচারীরা পেনশন পাওয়ার উপযুক্ত হওয়ার পরের মাস থেকেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের ব্যাংক হিসাবে মাসিক পেনশনের অর্থ পেয় যাবেন।
(প্রতিবেদনটিতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন প্রতিদিনের বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিরা)
(কাজী হাফিজ ও সেলিম আহমেদ)