কামরুল হাসান, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২৪ ১১:৩১ এএম
ত্রিশালের কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জয় বাংলা’ ভাস্কর্যের মূল অংশ অসম্পূর্ণ একটি বেদির ওপর রেখেই কাজ বন্ধ রেখেছে প্রশাসন। প্রবা ফটো
‘জয় বাংলা’ কেবল একটি স্লোগান নয়। এই প্রতিধ্বনি ছিল যুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের বড় অনুপ্রেরণা। যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালির গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রামের ইতিহাস। আর সেই মুক্তির ‘মন্ত্রের’ নামে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি করা হয় ভাস্কর্য। বাঙালির মুক্তি-সংগ্রামের ইতিহাসের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে নির্মিত ভাস্কর্যের নাম দেওয়া হয় জয় বাংলা। উদ্দেশ্য ছিল- তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রসার ঘটানো। অর্ধযুগের মাথায় স্থানান্তর ও সংস্কারের নামে ভাস্কর্যটি পড়ে আছে অযত্ন-অবহেলায়। সংস্কার না হওয়ায় বিঘ্নিত হচ্ছে ভাস্কর্যের সৌন্দর্য। একই সঙ্গে যে মূল্যবোধ থেকে ভাস্কর্যটি নির্মিত হয়েছে, তা-ও ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০১৭ সালের ৩ মে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন। এটি নির্মিত হয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহমুদের উদ্যোগে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেন ভাস্কর পলাশ শেখ। নির্মাণের পর পরিকল্পনায় ভুল দাবি করে প্রায় ১০০ গজ পূর্বে সরিয়ে ভাস্কর্যটিকে ঘিরে নতুন পরিকল্পনার কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই পরিকল্পনামাফিক গত বছরের ৮ নভেম্বর স্থানান্তর ও সংস্কারকাজ উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। সাত মাস পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি কাজ।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায় সংস্কারকাজ বন্ধ রয়েছে। ভাস্কর্যের মূল অংশটিরও রঙচটা অবস্থা। ভাস্কর্যটি ঘিরে আছে দৃষ্টিকটু একটি বাঁশের মাচা। ভাস্কর্যের মূল অংশ অসম্পূর্ণ একটি বেদির ওপর রেখেই কাজ বন্ধ রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আল মাহমুদ কায়েস বলেন, জয় বাংলা ভাস্কর্য আমাদের আবেগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে আমরা এটির স্থানান্তর সমর্থন করি। স্থানান্তরের নামে দীর্ঘদিন অযত্ন-অবহেলায় ফেলে রাখা সমর্থন করি না।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, জয় বাংলা ভাস্কর্যটি আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত। ভাস্কর্যের কাজ দ্রুত শেষ করা উচিত।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী জোবায়ের হোসেন বলেন, ভাস্কর্যের ওপরের অংশের কিছু কাজ এখনও বাকি। ওপরের অংশটি দেখভালের দায়িত্বে আছেন বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট। এটি শেষ হলেই আমরা মূল বেদির কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যান অনুসারে জয় বাংলা ভাস্কর্য প্রতিস্থাপন ও সংস্কার জরুরি ছিল। সংশ্লিষ্টদের দ্রুত সময়ে কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছি।