আরণ্যক শামছ
প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৪ ১৬:২০ পিএম
একদিন প্রত্যুষে প্রগতিশীল বৃক্ষের নিচে বসে বায়ুর জরিপ নিতে গিয়ে দেখি বৃষ্টির প্রার্থনায় নত হয়ে ঝুলে আছে পাতারা।
আর ক্লোরোফিল থেকে বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ছে মিথ্যামাখা রঙ। ঋতুর পাগলামিতে পাতাদের আড়াল থেকে বেরিয়ে আসছে পুঁজির গোমস্তারা। বৃক্ষের মূল থেকে সুগন্ধ ছড়াচ্ছে শিল্পবিপ্লবপ্রসূত মরণোন্মুখ জলবায়ুর বিবিধ রূপগুণ। হঠাৎ শোরগোল শুনে তাকিয়ে দেখি মগডালে বসেছে পাখিদের টক শো। তাদের কিচিরমিচির থেকে ক্রমাগত পড়ছে ঝরে মানুষের ভ্রূণহত্যার ইতিহাস, অনর্গল মিথ্যার উপমা, উৎপাদনযন্ত্রের খণ্ডাংশগুলো, চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে জাতিসংঘের হিমাগারে সঞ্চিত রক্তের দুর্লভ গ্রুপ ও শ্রমের বৈপরীত্যসমূহ। তার সাথে যোগ দিচ্ছে মানুষের সামাজিক চুক্তির ধারা, শ্রমিকের ঘাম, মজুরির সরলাংক ও ভগ্নাংশের ইতিহাস, নদীর আর্তনাদ আর মাটির রক্তাক্ত কীর্তনের কফিনগুলো। হঠাৎ আমার গায়ের চামড়া খসখস করে ওঠে। আর ভেতর থেকে কিলবিল করে বেরিয়ে আসতে থাকে ডাইনোসর, সাপ, বানর, বিবর্তনবাদ আর হারানো পৃথিবীর টুকরো টুকরো সত্য ও মিথ্যার পলেস্তারা। বিবিধ প্রজাতির সাপের দংশনে আমি নীল হতে হতে চিৎকার করতে থাকি। আর গিরিখাতে পড়ার আগেই আমার ঘুম ভেঙে যায়। ঘোরগ্রস্ত আমি এক গ্লাস জল হাতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে ভাবি, চাঁদটা ভাতের থালার মতো গোল। আর মানুষ কী সুন্দর আর কী কুৎসিত!